মধুপুর হাসপাতালে ৮ দিন বিদ্যুৎ নেই, চিকিৎসায় দুর্ভোগ, নষ্ট হচ্ছে টিকা-ভ্যাকসিন

মধুপুর (টাঙ্গাইল) থেকে আব্দুল্লাহ আবু এহসান: টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৩ এপ্রিল থেকে ৮ দিন বিদ্যুৎ না থাকায় চিকিৎসা সেবায় সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এই সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ ও ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ কর্তৃপক্ষের সাথে চলছে রশি টানাটানি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বেলায়েত হোসেন এ সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বিদ্যুৎ বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট ৫ টি দপ্তরে চিঠি দিয়েছেন।

মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৫০ কেভি ট্রান্সফরমারের মাধ্যমে জেলা স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ নিজস্ব অর্থায়নে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করে। ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ তাতে সংযোগ দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয়। ওই ট্রান্সফরমার গত ১৩ এপ্রিল (সোমবার) ভোর রাতে বিকল হয়ে পড়লে হাসপাতাল ও হাসপাতাল সংলগ্ন আবাসিক এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। এতে হাসপাতোলে সেবা নিতে আসা রোগী, ভর্তি হওয়া রোগী, কর্তব্যরত চিকিৎসক, হাসপাতাল আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগে পড়েন। হাসপাতালের ইপিআই, প্যাথলজি ও অন্যান্য  বিভাগের ফ্রিজগুলোতে রক্ষিত দামি ওষুধপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

হাসপাতালের ইপিআই বিভাগ জানায়, তাদের ফ্রিজে ১১ সহ¯্রাধিক রোগীর জন্য রাখা বিভিন্ন টিকা, ভ্যাকসিনের ভ্যায়াল মজুদ আছে। প্যাথলজিতে সংযোগ না থাকায় ফ্রিজে রাখা রি-এজেন্টসহ বিভিন্ন দামি ওষুধপত্র প্রয়োজনীয় তাপমাত্রার অভাবে নষ্ট হচ্ছে। মাইক্রোস্কোপ চলছে না। কালা জ্বরের টিকা নষ্ট হতে চলেছে ।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বেললায়েত হোসেন জানান, বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে তারা বলেন, বিকল হয়ে যাওয়া এ ট্রান্সফরমার বদলের দায়িত্ব পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নয়।

এদিকে ভর্তি রোগীর চিকিৎসা সেবায় নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় টয়লেট ব্যবহারের ফলে দুর্গন্ধ সারা হাসপাতাল এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। বেশি সময় এলাকায় টেকা যাচ্ছে না। স্বল্প আলোয় রাতের অনেক কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সন্ধ্যা থেকে রোগীরা মোমবাতি বা নিজস্ব আলোয় প্রয়োজন সাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। এ দুর্ভোগে পড়ে অনেক রোগী হাসপাতাল ছেড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর মধুপুর জোনাল অফিসে যোগাযোগ করলে ডিজিএম মোল্লা আবুল কালাম জানান, হাসপাতালের ওই ট্রান্সফরমার স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর তাদের নিজস্ব অর্থায়নে স্থাপন করে। ওটি বিকল হলে পরিবর্তনের দায়িত্ব তাদেও, আমাদের নয়। এক্ষেত্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুধু আমাদের কাজ। আমরা জনস্বার্থে তাৎক্ষণিক এক ফেইজে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করে এসেছি।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. আলমগীর হোসেন জানান, এ অবস্থায় দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে সংশ্লিষ্টদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করবে।