ঝিনাইদহে মোবাইল ফোনে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা কতটা পাচ্ছে মানুষ?

ঝিনাইদহ থেকে জাহিদুর রহমান তারিক: ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালসহ জেলার পাঁচটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোবাইল ফোনে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চালুর ছয় বছর পরও কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা। এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, প্রচার-প্রচারণার অভাব আর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবহেলার কারণেই তারা এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সহজে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চত করতে সরকার ২০০৯ সালের মে মাসে দেশের ৪৮২টি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোবাইল ফোনে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চালু করে। চিকিৎসা কেন্দ্রে উপস্থিত না হয়েও রোগীদের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ দেওয়ার উদ্দেশ্যে কার্যক্রমটি চালু করা হয়। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালসহ ৫টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারিভাবে মোবাইল ফোন সরবরাহ করা হয়। জনস্বার্থে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওই মোবাইল ফোন নম্বরগুলো জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রদর্শন ও প্রচারণার জন্য নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু ঝিনাইদহ জেলায় এ সংক্রান্ত প্রচার চালানো হয়নি।

প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণকে এই সেবার কথা জানানোর নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। মহেশপুর উপজেলার আজমপুর ইনিয়নের কলেজ ছাত্র মনিরুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে মোবাইল ফোনে জরুরি চিকিৎসাসেবা পাওয়া যায়, তা জানা নেই। তার মতো একই ধরনের অভিযোগ জেলার শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের। নিয়ম অনুযায়ী কর্মরত চিকিৎসক ২৪ ঘণ্টা মোবাইল ফোনে রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা সক্রান্ত পরামর্শ দেবেন। প্রতিদিন কতজনকে পরামর্শ দেওয়া হল, রোগী কি ধরনের পরামর্শ চেয়েছেন তা লিপিবদ্ধ করতে হবে। অথচ জেলার হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতে তা মানা হয় না।

হরিণাকুণ্ডু উপজেলা শহরে বসবাসকারী তারিক হাসান বলেন, জরুরি প্রয়োজনের সময় মোবাইল ফোনে কল দিলে ঠিকমত রিসিভ হয় না। যে কারণে এখন আর ফোন দিই না। জেলা সদরে বসবাসকারী শিক্ষক আব্দুল মতিন জানান, সদর হাসপাতালের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে কোনও সেবা পাওয়া যায় না। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে শনিবার বেলা ১২টার দিকে এই প্রতিবেদক ফোন করলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. নাজমুন নাহার বলেন, মোবাইল ফোনে অনেক রোগী পরামর্শ নিয়ে থাকেন। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে একজন ফোন করেছিলেন। তাকে সেবা দেওয়া হয়েছে। লিপিবদ্ধ করেছেন কিনা তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যস্ততার কারণে অনেক সময় তা হয়ে ওঠে না। তবে হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিলে ভাল হয় বলেও তিনি জানান।

মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মঙ্গলবার বিকাল ৪ টার দিকে ফোন করলে হাসপাতালের একজন স্টাফ রিসিভ করেন। পরে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ডাক্তারকে চাইলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে ফোন কেটে দেন। এ বিষয়ে সিভিল সার্জন আব্দুস সালাম জানান, অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। সেই সাথে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করার জন্য যা যা করার দরকার তা করা হবে।