দিনাজপুর থেকে রতন সিং: দিনাজপুর হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের অভিযোগ ছাত্র নেতা রিয়েল-অরুন ব্যাপক টেন্ডারবাজী-চাঁদাবাজী করে শিক্ষকদের সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের মাধ্যমে বেপেরোয়া হয়ে উঠেছিল। তাদের ইন্ধনেই হত্যা ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।
সোমবার দুপুরে হাবিপ্রবি’র কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. মোঃ আনিস খান ও সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. বলরাম রায় এক লিখিত বক্তব্যে এসব মন্তব্য করেন। শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কৃত ছাত্র অরুন কান্তি রায়, জাহিদুর রহমান ও ইফতেখারুল ইসলাম রিয়েলের নেতৃত্বে গত ১৬ এপ্রিল রাতে জঘন্য হামলা চালানো হয়। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে মুখোশধারী সশস্ত্র দুস্কৃতিকারীরা তাদের নেতৃত্বে হামলা চালায়। এসময় ৩টি মাইক্রোবাসে ভুয়া নাম্বার প্লেট ব্যবহার করা হয়েছে।
শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, আল্লাহর অশেষ রহমতে উপাচার্য প্রফেসর মোঃ রুহুল আমিন প্রাণে বেঁচে গেছেন। ওই ছাত্রনামধারী দুস্কৃতিকারী চক্র যে ভাবে তাঁকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি করে তাতে উপাচার্যের লাশ হওয়ার কথা। গত ৪ দিনেও কোতয়ালী পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এজাহারের ভিত্তিতে মামলা দায়ের না করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। প্রক্টর ড. এটিএম শফিকুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় কোতয়ালী থানায় মামলার জন্য এজাহার দেওয়া হলেও পুলিশ তা গ্রহণ না করে এজাহার সংশোধন করে দিতে বলেছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এজাহার সংশোধনের পুলিশী দাবি নাকচ করে জানিয়ে দেন যে এজাহার দেওয়া হয়েছে সেটার ভিত্তিতেই মামলা রেকর্ড করতে হবে। মামলার তদন্তে পুলিশের যা করণীয় সেটা তারা করবেন।
সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. বলরাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তাই ভিন্ন কোনও তদন্ত কমিটির প্রয়োজন নেই। তবে সংসদীয় তদন্ত কমিটি বা মন্ত্রণালয় থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হলে তাদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর মোঃ মিজানুর রহমান, প্রফেসর ড. শাহাদাৎ হোসেন খান, প্রফেসর এটিএম শফিকুল ইসলাম, প্রফেসর হারুন-উর-রশিদ, প্রফেসর ড. মোঃ ফজলুল হক ও প্রফেসর শ্রীপতি সিকদার।
এদিকে হাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইফতেখারুল ইসলাম রিয়েল ও সাধারণ সম্পাদক অরুন কান্তি রায় স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে ১৬ এপ্রিল ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মিল্টন ও সদস্য মোঃ জাকারিয়ার হত্যাকা-ের জন্য উপাচার্যকে দায়ী করে বলেন, তাঁর নির্দেশেই সশস্ত্র বাহিনী ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে শেখ রাসেল হল ঘেরাও করে হামলা চালায়। এই হামলায় মিল্টন ও জাকারিয়া নৃশংস্যভাবে নিহত হন।