সৌদি আরব নেতৃত্বাধীন জোট ইয়েমেনের বিদ্রোহিদের উপর বোমা হামলা বন্ধ করেছ। ইয়েমেনের সরকার এবং প্রেসিডেন্ট আবদুরাব্বাহ মনসুর আল হাদীর অনুরোধে হামলা বন্ধ করা হয়। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সৌদি জোটের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ আল আসিরি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
জেনারেল আসিরি বলেন, বিদ্রোহীরা বেসামরিক লোকদের জন্য আর হুমকি বিবেচিত না হওয়ায় মধ্যরাত থেকে এ অভিযান শেষ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ভালো পরিকল্পনা ও তার সঠিক বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমাদের উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। আমাদের বৈমানিক, আমাদের নাবিক, আমাদের সৈন্যদের সাহসিকতাও এক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছে।
ইয়েমেনের রাজনৈতিক পরিস্থিতির সমাধান এবং স্থানীয় সন্ত্রাস বিরোধী বিষয়টিকে অগ্রাধিকারে রেখে সৌদি আরব একটি নতুন কার্যক্রম পরিচালনা করবে বলে জানিয়েছে। এ বিষয়ে জেনারেল আসিরি বলেন, এ কার্যক্রমের প্রধান লক্ষ্য হবে ইয়েমেনের পুনগর্ঠন, এর পাশাপাশি বিদ্রোহীদের বিরোধিতাও চলমান থাকবে। ভবিষ্যতে বিমান আক্রমণের সম্ভাবনাও বাতিল করেননি আসিরি।
সৌদি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, এ বিমান অভিযান সৌদি আরব এবং এর প্রতিবেশী দেশগুলোর নিরাপত্তাজনিত হুমকি দূর করেছে। কারণ এর মাধ্যমে হাউদি জঙ্গিদের দখলে থাকা শক্তিশালী অস্ত্র এবং ক্ষেপণাস্ত্র মিসাইল ধ্বংস করা হয়েছে।
শেষবারের মত সরাসরি বিমান আক্রমণ চালানো হয়েছে গত মঙ্গলবার। এ হামলায় প্রায় ৩০ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটে। নিহতদের বেষিরভাগই বেসামরিক লোক বলে জানা যায়।
পশ্চিমের শহর ইব এর একটি ব্রিজে হাউদি বিদ্রোহী যোদ্ধাদের একটি বহরের উপর বিমান থেকে বোমা আক্রমণ চালানো হলে কমপক্ষে ২০ জনের মৃত্যু ঘটে। সেখানকার অধিবাসী এবং নিরাপত্তাবাহিনীর সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। এছাড়াও সৌদি সীমান্তের কাছে উত্তরের শহর হারাথ-এ আরো নয়জন নিহত হয়।
হাউদি বিদ্রোহিদের অগ্রযাত্রা রুখতে এ জোট প্রায় একমাস সময়ব্যাপি বিমান আক্রমণ পরিচালনা করে ।
হাউদি নামে পরিচিত জিহাদি শিয়া বিদ্রোহীরা এ বছরের জানুয়ারি মাসে ইয়েমেনের রাজধানী সানার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের পর থেকেই দেশটি সংঘাতে জর্জরিত হয়। তারা ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আবদুরাব্বাহ মনসুর আল হাদীকে গৃহবন্দী করে। ক্ষমতা হারানো সাবেক প্রেসিডেন্ট আলী আব্দুল্লাহ সালেহ’র অনুগত সামরিক বাহিনীর একটি অংশ হাউদি বিদ্রোহিদের সমর্থন দিয়ে আসছে। প্রেসিডেন্ট হাদি ফেব্রুয়ারী মাসে পালিয়ে এডেনে আশ্রয় গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু মার্চের শেষ দিকে হাউদি যোদ্ধারা দক্ষিনের এই বন্দর শহরের কাছাকাছি চলে আসলে প্রেসিডেন্ট হাদি দেশ ছাড়তে বাধ্য হন।
শিয়া-শাসিত ইরান হাউদিদের সমর্থন দিচ্ছে বলে অভিযোগ করে আসছে সৌদিদ্রিব। তবে ইরান এ অভিযোগ অস্বিকার করে।