গোপালগঞ্জ থেকে হায়দার হোসেন: গোপালগঞ্জের কালনা ফেরিঘাটে ব্রীজ নির্মাণের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমির ক্ষতিপূরণের দাবিতে গোপালগঞ্জ ও নড়াইল জেলার ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকরা মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে। বুধবার সকাল সাড়ে ১০ টায় গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার কালনা ফেরিঘাটের পশ্চিমপাড়ে দুই জেলার শতাধিক পরিবারের ৩ শতাধিক নারী-পুরুষ ঘন্টাব্যাপী এসব কর্মসূচিতে অংশ নেন। শুধু ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারই নয় এই কর্মসূচিতে অংশ নেন নড়াইল ২ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট শেখ হাফিজুর রহমান।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া নড়াইল ২ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট শেখ হাফিজুর রহমান বলেন, উদর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপিয়ে নিরন্ন মানুষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। প্রশাসন বলতে চায় এখানকার মানুষ জমির কোনও ক্ষতিপূরণ পাবেনা। কারণ এদের নামে কোনও রেকর্ড নাই। এক সময় এখানে নদী ছিল। নদীতে চর পড়েছে। চর জাগার পর রেকর্ড প্রস্তুত করার দায়িত্ব ছিল প্রশাসনের। তারা তা না করে জনগণের ক্ষতি করেছে। আমি খুবশীঘ্র এইসব জমি মালিকদের নামে জমির মালিকানা ফিরিয়ে দিয়ে তাদের ন্যায্যমূল্য দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
এসময় নড়াইলের লোহাগাড়া ইউপি চেয়ারম্যান বদর খন্দোকার, মো. হেমায়েত হোসেন, আফরোজা আক্তার, বেলায়েত হোসেন ও মফিজুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা তাদের অধিগ্রহণকৃত জমির ন্যায্যমূল্য ও পূর্ণবাসনের দাবি করেন। তারা আরো বলেন, ক্ষতিপূরণ না পাওয়া পর্যন্ত কালনা ঘাটে যানবাহন চলাচল বন্ধ, প্রয়োজন হলে কাফনের কাপড় গায়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পর্যন্ত যাব। তারা এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
গোপালগঞ্জ ভুমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা জিলাল হোসেন বলেন, ইতিপূর্বে কালনা ব্রীজের সম্প্রসারণ সড়কের জন্য জমি সনাক্ত, সনাক্তকৃত জমির উপর সকল ধরনের স্থাপনা নির্ণয় করা হয়েছে। যেসব মালিকানা জমির উপর দিয়ে সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে তাদের কাছে জমির বৈধ প্রমাণপত্র চাওয়া হয়েছে। যে যে দিতে পারবে তারা ক্ষতিপূরণ পাবে। যে জমি খাস খতিয়ানে রয়েছে সেগুলোর কোনও ক্ষতিপূরণ পাবে না। যারা সরকারি জমিতে বসবাস করছে তারা যদি মালিকানা প্রমাণ করতে পারে তাহলে ক্ষতিপূরণ পাবে।
চলতি অর্থবছরে ঢাকা-বেনাপোল সড়কের গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার কালনায় মধুমতি নদীর উপর প্রায় ৩শ” কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ লেন বিশিষ্ট ব্রীজ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। বিগত ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি একনেকে এই প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বীজের ভিত্তিপ্রত্তর স্থাপন করেন। ব্রীজ নির্মাণের জন্য নদীর উভয় পাড়ে সরকার ইতিমধ্যে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এতে দুই পাড়ের শতাধিক পরিবারের প্রায় দেড়শ একর জমি সড়কের জন্য ব্যবহৃত হবে। জমির মূল্য বাবদ ক্ষতিপূরণের কোনও অর্থ পাবেনা বলে সংশ্লিষ্ট বিভাগ জমির ভোগদখলকারীদের জানিয়েছেন। কেননা ঐ জমির আরএস ও সিএস প্রকৃত মালিকদের হলেও বিএস-এ এসব সম্পত্তি সরকারিীৎ হিসাবে দেখানো হয়েছে।