শেরপুর থেকে হাকিম বাবুল: মানসম্মত বীজ ব্যবহারে ফসলের উৎপাদন শতকরা ১৫ থেকে ২৫ ভাগ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। এজন্য কৃষকরা যাতে সহজে তাদের বীজ পরীক্ষা করতে পারে সেই লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ‘ভ্রাম্যমান বীজ পরীক্ষাগার’ চালু করেছে। ভ্রাম্যমান বীজ পরীক্ষাগারের গাড়ি কৃষকের দোড়গোড়ায় যাবে এবং সেখানে কৃষকরা বিনামূল্যে তাদের বীজ পরীক্ষার সুযোগ পাবেন। এমনকি কৃষকরা বাড়িতে বসেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সেই বীজ মানসম্মত কিনা তা তাদের জানিয়ে দেওয়া হবে। এ ভ্রাম্যমান বীজ পরীক্ষাগার কৃষক ও কৃষি বিশেষজ্ঞদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে।
শেরপুর থেকে যাত্রা শুরু করলো ভ্রাম্যমান বীজ পরীক্ষাগার বা ‘মোবাইল সীড টেস্টিং ল্যাবরেটরী’। শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ২৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার এ উপলক্ষে এক কৃষক প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। এতে মানসম্পন্ন বীজ ব্যবহারের গুরুত্ব, বিভিন্ন মানের বীজের ধরণ, মানসম্মত বীজ উৎপাদন ও ব্যবহার, বীজ ব্যবসায়ী হওয়ার পদ্ধতি, বীজমান পরীক্ষা এবং মোবাইল বীজ পরীক্ষাগার বিষেয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সির উপ-পরিচালক এবং ভ্রাম্যমান বীজ পরীক্ষাগার কর্মসূচি পরিচালক ড. হাসান কবীর, সিনিয়র সীড টেকনোলোজিস্ট ড. শুকদেব কুমার দাস, খামারবাড়ীর প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা ড. আব্দুর রাজ্জাক এ প্রশিক্ষণ প্রদান করেন।
এ উপলক্ষে উপজেলা অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সাঈদ মোল্লার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন শেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আব্দুছ ছালাম। অন্যান্যের মধ্যে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আসমত আরা, বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তা আবু সাঈদ আখতারুজ্জামান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফ ইকবাল, আওয়ামী লীগ সভাপতি জিয়াউল হোসেন, সহ-সভাপতি আব্দুস সবুর প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এ প্রশিক্ষণে নালিতাবাড়ী উপজেলার বীজ উৎপাদন ও ব্যবহারকারী ৩০ জন কৃষক এবং ৩০ জন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাসহ ৬০ জন অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ শেষে অংশগ্রহণকারীরা ভ্রাম্যমান বীজ পরীক্ষাগারের গাড়ি পরিদর্শন করে বীজমান পরীক্ষার নানা কৌশল স্বচক্ষে দেখে বাস্তবজ্ঞান লাভ করেন। কৃষক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, এটা আমাদের কৃষকদের জন্য খুবই কাজে লাগবে। এখন দরকার মতো আমরা বীজ এখান থেকে টেস্ট কইরাই ফসল ফলাইতে পারবো।
ভ্রাম্যমান বীজ পরীক্ষাগার কর্মসূচি পরিচালক ড. হাসান কবীর বলেন, দেশে এই প্রথম শেরপুর থেকে ভ্রাম্যমান বীজ পরীক্ষাগার কার্যক্রম চালু হলো। প্রাথমিকভাবে শেরপুরের নকলা, নালিতাবাড়ী ও সদর উপজেলা এবং কিশোরগঞ্জের সদর, পাকুন্দিয়া ও হেসেনপুর জেলায় এ কার্যক্রম চলবে। এ মোবাইল ভ্যানে বীজের আর্দ্রতা, ভেজাল ছাড়াও এখানে অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা পরীক্ষা করা হবে। সাত দিনের মধ্যে অঙ্কুরোদগম পরীক্ষার ফলাফল কৃষকের মোবাইল ফোনে এসএমএস এবং ই-মেইল নম্বর এমনকি স্থানীয় ইউনিয়ন তথ্য কেন্দ্রে ম্যাসেজ দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে।