নেপালে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে নিহতের সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়ে গেছে। শনিবারের (২৫ এপ্রিল) ভূমিকম্পে রাজধানী কাঠমাণ্ডুসহ পুরো দেশটাই যেন পরিণত হয়েছে মৃত্যুপুরীতে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে সোমবার (২৭ এপ্রিল) সকালে এ খবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। এছাড়া, এ ঘটনায় অন্তত সাড়ে ছয় হাজার মানুষ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নেপালে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ছয়শ’ জনে। দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার প্রধান রামেশ্বর দাঙ্গাল সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, রোববার (২৬ এপ্রিল) রাতেও দ্বিতীয় দিনের মতো খোলা আকাশের নিচে কেটেছে ভূমিকম্প বিধ্বস্ত নেপালের বাসিন্দাদের। রাজধানী কাঠমাণ্ডুতে হাজার হাজার মানুষ তাঁবু টাঙিয়ে রাত পার করেছেন। এদের অধিকাংশের ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। বাকিরা ঘরে ফিরতে ভয় পাচ্ছেন বলে রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া দেশটির প্রত্যন্ত অঞ্চলের সঠিক চিত্র এখনো জানা যাচ্ছে না।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়, ৭ দশমিক ৯ মাত্রার শক্তিশালী এ ভূমিকম্প শনিবার দুপুরে নেপালে আঘাত হানে। গত ৮১ বছরের মধ্যে এটাই নেপালের ভয়াবহতম ভূমিকম্প।
শনিবার দফায় দফায় ভূমিকম্পের কারণে কাঠমান্ডু ও পোখারার বেশ কিছু সড়কেও ফাটল ধরে। জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় দেশটির একমাত্র ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট ত্রিভূবন এয়ারপোর্ট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে বাড়িঘর যেমন বিধ্বস্ত হচ্ছে, তেমনি রাস্তা বন্ধ হয়ে ব্যাহত হচ্ছে যোগাযোগ।
দেশটিতে বহু প্রাণহানি ছাড়াও ধ্বংস হয়েছে অনেক ঐতিহাসিক স্থাপনা। এর মধ্যে কাঠমান্ডুর ধারাহারা বা ভীমসেন টাওয়ার একটি। ১৮৩২ সালে নির্মিত এই ভবনটি গুঁড়িয়ে গেছে।
সরকারি সূত্র বলছে, ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত বহু বাড়িঘরের নিচে অনেক মানুষ চাপা পড়েছে।
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু এবং এর উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত পোখারা নগরের মাঝামাঝি লামজুং ভয়াবহ এ ভূমিকম্পের উৎসস্থল বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস)। সংস্থাটির মতে, গতকাল দুপুরে নেপালে মোট ১৫ বার ভূকম্পন অনুভূত হয়।