শেরপুর থেকে হাকিম বাবুল: শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে সাভারের রানা প্লাজা ট্রাজেডিতে নিহত শ্রমিকদের ২৪ এপ্রিল শুক্রবার চোখের জলে স্মরণ করেছে তাদের স্বজনরা। দুই বছর আগে এই দিনেই সভারের রানা প্লাজা ভবন ধসে নালিতাবাড়ী উপজেলার চকপাড়া, কদমতলী, মধ্যমকুড়া ও পিঠাপুণি গ্রামের ১০ গার্মেন্ট শ্রমিক নিহত হয়েছিল। দুপুরে নিহতদের স্মরণে স্বজনদের উদ্যোগে স্থানীয় মসজিদে দোয়া মাহফিল ও কবর জিয়ারত করা হয়। কবরস্থানে নিহতদের স্বজনরা উপস্থিত হওয়ার পর সেখানে এক হৃদয় বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এসময় উপস্থিত সবাই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
সভারের রানা প্লাজা ট্রাজেডির সেদিনের ঘটনায় নালিতাবাড়ী উপজেলার চকপাড়া মহল্লার হারেজ আলীর পুত্র আব্দুল হালিম, মন্নাফ মিয়ার পুত্র সেলিম রানা, পুত্রবধূ রহিমা বেগম, কন্যা মুনিরা, হাবিবুর রহমানের পুত্র সেকান্দর, সেন্টু, আ্ব্দুর রশীদের কন্যা রোকসানা , জামাতা ইমরান, পিঠাপুণি গ্রামের সুরুজ আলীর পুত্র কাউসার, শিমুলতলা গ্রামের আনিস নিহত হয়েছিলেন। আহত হন আরও প্রায় অর্ধশতাধিক শ্রমিক।
এদিকে, হতাহতদের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো এখনও পূর্ণাঙ্গ সহায়তা যেমন পাননি তেমনি আহত শ্রমিকদেরকে অন্য জায়গায় কাজ পাওয়াও দুষ্কর হয়ে পড়েছে। প্রাণে বেঁচে যাওয়া আহত শ্রমিকরা ক্ষতিপূরণ হিসাবে নাম মাত্র কিছু টাকা পেলেও কাজ পাচ্ছেনা অন্যকোনো দেশি-বিদেশি পোশাক কারখানায়। আহত শ্রমিকদের অভিযোগ, রানা প্লাজার শ্রমিকদের কাজে নিলে সময়-অসময়ে ছুটি বেশি দিতে হবে, এমন অজুহাতে তাদের অন্য কোনো কারখানা কাজে নিচ্ছেনা। যার ফলে পরিবারগুলোর দিন কাটছে চরম হতাশায়। এতে করে ক্ষতিগ্রস্তরা অনেকেই মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। ।
রানা প্লাজা ধসে নিহত সেলিমের পিতা আব্দুল মান্নান জানান, আমরা কর্তৃপক্ষের ঘোষিত সহায়তার অর্ধেক টাকাও পাইনি। কীভাবে আমাদের সংসার চলবে। নিহতের রেখে যাওয়া সন্তানের ভরন-পোষণ কীভাবে করব চিন্তায় আছি। আহত শ্রমিক নালিতাবাড়ীর চকপাড়া গ্রামের আব্দুল মজিদের পুত্র খোরশেদ আলম জানান, রানা প্ল¬াজা ধসের দুই বছর পেরিয়েছে। আমরা কোনো কাজ পাচ্ছিনা। বাড়িতে বেকার বসে আছি।
অসহায় এসব পরিবারগুলোকে সরকারের তরফ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা ও তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার ভবিষ্যত নিয়ে সরকার আরো আন্তরিক হবেন-এমনটিই প্রত্যাশা করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি নালিতাবাড়ী পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো. জহুরুল হক।