ঈশ্বরদী (পাবনা) থেকে স্বপন কুমার কুন্ডু: কলকাতা-ঢাকাগামী মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনে মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে বিজিবির তল্লাশির সময় চোরাচালানীদের তোপের মুখে পড়লে তিন রাউন্ড গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। যাত্রীরা তাদের মালামাল নিয়মতান্ত্রিকভাবে আটক না করে বিজিবি লুট করেছে বলে অভিযোগ করেছে।
জানা যায়, ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে পূর্ব থেকে প্রস্তুতি নিয়ে থাকা কুষ্টিয়ার মিরপুর সেক্টরের একদল বিজিবি সদস্য ২.৩৪ মিনিটে মৈত্রী এক্সপ্রেস থামার সাথে সাথে তল্লাশি শুরু করে। প্রায় ২০ মিনিট তল্লাশি করে বিজিবি যাত্রীদের প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল ভর্তি ১৮/২০ টি ব্যাগ জব্দ করে। এসময় যাত্রীরা জব্দ তালিকা না করার অভিযোগ করেছে। আটককৃত ব্যাগের যাত্রীদের সাথে আরও কিছু লোক যোগ দিয়ে ব্যাগগুলো ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে বিজিবি তিন রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে তাদের গাড়ি নিয়ে দ্রুততার সাথে স্থান ত্যাগ করে। ট্রেনটি তল্লাশির কারণে ১৫ মিনিট বিলম্বে ২টা ৫৯ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
ঈশ্বরদী জিআরপি থানা পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, রেলওয়ে কর্মচারী, ট্রেন যাত্রী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, মৈত্রী ট্রেনটি পানি নেওয়ার জন্য ঈশ্বরদী স্টেশনে থামার সাথে সাথে অনিয়তান্ত্রিকভাবে কোচের দরজা যাত্রীরা খুলে দেয়। এই সুযোগে প্লাটফর্মে অবস্থানরত বিজিবি সদস্যরা প্রথম শ্রেণির কোচ থেকে শুরু করে বিভিন্ন কোচে তল্লাশি করে যাত্রীদের মালামাল বোঝাই ব্যাগ বের করে বিজিবির গাড়িতে উঠাতে থাকে। এতে স্থানীয় চোরাচালানীদের লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে বিজিবির উপর আক্রমণের চেষ্টা করলে বিজিবি’র সদস্যরা তিন রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে গাড়ি নিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে।
কোচ ডি-১/৬ আসনের ঢাকাগামী যাত্রী আলাল, শওকত খান, মানিক, কোলকাতার বাসিন্দা মেনোতারাসহ বিভিন্ন যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, আমাদের ব্যবহারের জন্য কেনা কাপড়, কসমেটিক ও ভিডিও ক্যামেরাসহ বিভিন্ন মালামাল বিজিবির সদস্যরা কোনও প্রকার যাচাই বাছাই ছাড়াই জোড় পূর্বক নামিয়ে নেয়।
ঈশ্বরদী রেলওয়ে জিআরপি থানার ওসি হুমায়ূন কবীর জানান, জিআরপির সদস্যরা নিয়ম মাফিক মৈত্রী ট্্েরন পাছিংয়ের দায়িত্বে ছিলেন। বিজিবির তল্লাশি সম্পর্কে আমাদের সহযোগিতা চাওয়া হয়নি বলে তিনি জানান। উল্লেখ্য, এর আগেও দুই বার একই সেক্টরের বিজিবি সদস্যরা প্রায় তিন কোটি টাকার মালামাল আটক করার সময় মারপিট ও গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটলে বিজিবি সদস্যসহ সাতজন আহত হয়।