বরিশালে ভূমিকম্প আতংকে খোলা আকাশের নিচে চলছে পরীক্ষা

বরিশাল থেকে এম.মিরাজ হোসাইন: পর পর কয়েকদফা ভূমিকম্পের আতঙ্কে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ছেড়ে স্কুল মাঠে চলছে শিক্ষার্থীদের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা। দু’বছর আগে জেলার উজিরপুর উপজেলার ৮২নং শিকারপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও নতুন স্কুল ভবন নির্মাণের কোনও উদ্যোগ না নেওয়ায় বাধ্য হয়ে এই ব্যবস্থা নিতে হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষের।
01
পাঁচ বছর ধরে বিদ্যালয়টির পাশের হার শতভাগ। অথচ শিক্ষার্থীদের নির্বিঘেœ পড়াশোনা করার নেই কোনও ব্যবস্থা। কারণ বিদ্যালয় ভবনটি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় গত দু’বছর পূর্বে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। সেই থেকে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই চলছিলো শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও পরীক্ষা। এরইমধ্যে তিন দফা ভূমিকম্পনের পর অভিভাবক, শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভবন ধসের আতংক দেখা দেয়। ফলে বাধ্য হয়েই ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ছেড়ে স্কুল মাঠে চলছে শিক্ষার্থীদের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা।

বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের মাঠে চলছে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পরীক্ষা। একই স্থানে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পরীক্ষা শুরু হবে দুপুর দুইটায়। প্রধান শিক্ষক আবুল বাসার মৃধা জানান, ১৯৪২ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে আড়াই শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। তিনি আরো জানান, ১৯৯৪ সালে তিনটি কক্ষ বিশিষ্ট নির্মিত স্কুল ভবনে ২০১৩ সালে ফাঁটল দেখা দেয়। ছাদের পলেস্তারা খসে পড়তে থাকে। এ অবস্থায় উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা প্রকৌশলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুরো ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন। সেই থেকে নতুন ভবনের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ব্যর্থ হয়ে বাধ্য হয়েই ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষেই পাঠদান ও পরীক্ষা নেয়া হয়।

বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন জানান, অতিসম্প্রতি তিন দফা ভূমিকম্পনের পর অভিভাবক, শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভবন ধসের আতংক দেখা দেয়। অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের স্কুলে আসতে দিতে চাচ্ছেন না। পরবর্তীতে সর্বসম্মতিক্রমে স্কুল মাঠে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান ও পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সে অনুযায়ী গত মঙ্গলবার থেকে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ছেড়ে স্কুল মাঠেই চলছে শিক্ষার্থীদের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শহিদুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের পাঠদান যাতে ব্যহৃত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে জরুরি ভিত্তিতে নতুন স্কুল ভবন নির্মাণের জন্য সংশি¬ষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে আবেদন পাঠানো হয়েছে।