বাংলাদেশে ৩৩২ (মুমিনুল ৮০, ইমরুল কায়েস ৫১, ওয়াহাব ৩/৫৫) ও ৫৫৫/৬ (তামিম ২০৬, ইমরুল ১৫০, সাকিব ৭৬*, জুনায়েদ ২/৮৮), পাকিস্তান ৬২৮ (হাফিজ ২২৪, আজহার ৮৩, শফিক ৮৩, সরফরাজ ৮২, তাইজুল ৬/১৬৩)
তামিম ইকবাল আর ইমরুল কায়েসের যাদুকরী উদ্বোধনী জুটি প্রায় দু’দিন চালকের আসনে থাকা পাকিস্তানকে শেষ পর্যন্ত আর ম্যাচে ফিরতে দেয়নি। এ জুটির মহাকাব্যিক ব্যাটিং ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে রেকর্ড বইয়ের অনেক হিসেব-নিকেষ পাল্টে দিয়েছে। ম্যাচ জেতার মতো ২৯৬ রানের লিড নিয়ে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েও বলতে গেলে তামিম-ইমরুলের শাসানো ব্যাটিংয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট ড্রয়ের গৌরবময় স্বাদ নিল বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। এ জুটির পাল্টা আক্রমণে চতুর্থ দিনই ড্রয়ের ইঙ্গিত মিলেছিল। আজ যেন সেটার অানুষ্ঠানিকতা হলো মাত্র।
বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সোনার অক্ষরে লিখে রাখার মতো দুটি দিন ছিল খুলনা টেস্টের চতুর্থ ও পঞ্চম দিন। তামিম ইকবাল ক্যারিয়ারে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি পেয়েছেন। মুশফিকের ২০০ ডিঙ্গিয়ে তার ২০৬ এখন বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের সেরা টেস্ট ইনিংস। একটু সাবধানী হলেই হয়তো ইনিংসটা আরো লম্বা হতে পারত। দলীয় ৩৯৯ রানের মাথায় মোহাম্মদ হাফিজের বল উইকেট ছেড়ে এসে মারতে চেয়েছিলেন, তাকে ফাঁকি দিয়ে বল জমা পড়ে সরফরাজের গ্লাভসে, স্ট্যাম্পিংয়ের আগে তামিম উইকেটে ফেরার যথেষ্ট সময় পেয়েছিলেন, ফিরেছিলেনও। কিন্তু তার ব্যাট যথাসময়ে মাটি স্পর্শ করেনি!

তামিমে মুগ্ধ পাকিস্তান দলের ক্রিকেটাররা আউটের পর একে একে এসে তাকে অভিনন্দন জানায়। গ্যালারি আর সতীর্থরাও। প্রায় পৌনে আট ঘন্টা ব্যাটিং করেছেন, ২৭৮ বল খেলেছেন। ২০৬ রানের ইনিংসে ১৭ চার, আর চারটা ছয়। চুয়াত্তরের ওপর স্ট্রাইক রেট বলে দেয় কতটা আক্রমণাত্মক ছিলেন তামিম। প্রয়াত ফুফুর জন্য এর চেয়ে ভালো উপহার আর কী হতে পারে!
তামিমের সঙ্গে ৩১২ রানের রেকর্ড জুটি গড়ে ইমরুল ফিরে যান ব্যক্তিগত ১৫০ রানে। ইমরুলও আক্রমণের প্রতিযোগিতায় ছিল তামিমের সঙ্গে, ২৪০ বল খেলে ১৬ চার আর তিন ছয়ে ১৫০ রান করেন। জুলফিকার বাবরকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অফে ধরা পড়েন। ততক্ষণে অবশ্য বাংলাদেশের ১৬ রানের লিড হয়ে গেছে। পাকিস্তান পরে আরো চার উইকেট তুলে নিলেও মুমিনুল, মাহমুল্লাহ, সাকিব, সৌম্যদের ব্যাটিংয়ে ততক্ষণে টাইগাররা বীপৎসীমা পেরিয়ে যায়।
শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ছয় উইকেট হারিয়ে ৫৫৫ রান তুললে দুই অধিনায়ক অবধারিত ড্র মেনে নেন। সাকিব ৭৫ রানে আর শুভাগত ২০ রানে অপরাজিত। ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন তামিম ইকবাল।