শেরপুর থেকে রেজাউল করিম বকুল: শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। তেমনি পড়া লেখার কোনো বয়স নেই। তার প্রমাণ করলেন ৫২ বছর বয়সে আনছার আলী। তিনি ছেলের সাথে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে পাস করলেন। আনছার আলী শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার ১০নং যোগানিয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান। এছাড়াও নালিতাবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান এসোসিয়েশনের সভাপতি। আনছার আলী উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০১৪ সালে মানবিক বিভাগে জিপিএ-২ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। একইসাথে তার ছেলে সোহেলা রানা (২৫) পেয়েছেন জিপিএ-২.৯। বাবা ছেলে পাস করে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন।
আনছার আলী জানান, তিনি ১৯৭৭ সালে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। সে সময় তার মা বাবা মারা যায়। তারা সাত ভাই, তিন বোন। এর মধ্যে সবার বড় তিনি। তাই তার ওপর আসে সংসারের দায়িত্ব। অভাবের সংসারে ঘানি টানতেই তার পরীক্ষা দেওয়া হয়নি। এরই মধ্যে গড়িয়ে যায় অনেক সময়। নিজে বিয়ে করেন। তার ঘরে আসে তিন ছেলে এক মেয়ে। ছেলেদের পড়া লেখার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সংসারের টানাপোড়েনে ব্যর্থ হন তিনি। ছেলেদের বিয়ে করিয়ে তুলে দেন সংসারের দায়িত্ব। মেয়ে আসমা উল হোসনা বাবার ইচ্ছা পূরণে ভর্তি হয়েছেন ময়মনসিংহ মুমিনুন্নেসা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি বিএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। বর্তমানে আনছার আলীর ছেলে মেয়ে আর নাতী নাতনী নিয়ে বিশাল সংসার।
সম্প্রতি আনছার আলী সাক্ষাতকারে আরো জানান, ইউপি নির্বাচনে হলফ নামায় শিক্ষাগত যোগ্যতা লিখতে গিয়ে খুব কষ্ট পেয়েছেন। তাই প্রতিজ্ঞা করেছিলেন কমপক্ষে এসএসসি পাস করবেন। তাই এক বন্ধুর পরামর্শে তিনি আর তার ছেলে সন্যাসীভিটা উচ্চ বিদ্যালয়ে উন্মুক্ত বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি হন। তিনি ছেলের সাথে ক্লাশ করেছেন। অবশেষে জীবনের শেষ প্রান্তে এসে এসএসসি পাস করতে পেরে তিনি খুব খুশি। তার প্রত্যাশা এইচএসসি পাস করা।