ঈশ্বরদী (পাবনা) থেকে স্বপন কুমার কুন্ডু: ঈশ্বরদীর ব্যস্ততম আর্থিক লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানের ভেতর থেকে অভিনব কায়দায় প্রতারকচক্র আশি হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। প্রতারণার শিকার গৃহবধু লিপি খাতুনের সাথে ব্যাংক ম্যানেজার আব্দুল মতিন দুর্ব্যবহার করেছেন বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।
ভুক্তভোগী ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহক ও মহেশ্বর গ্রামের জিয়াউর রহমানের স্ত্রী লিপি খাতুন জানান, মঙ্গলবার সাড়ে বারোটার দিকে তিনি দুবাই হতে স্বামীর পাঠানো এবং ওমান হতে ছোট বোন জুলেখার স্বামীর পাঠানো টাকা আনার জন্য ব্যাংকে যান। তিনি ব্যাংক হতে নব্বই হাজার টাকা তোলেন। ক্যাশিয়ার তাকে পাঁচশ টাকার নোট ৮৯,৫০০ এবং পাঁচ টাকার নোটের একটি বান্ডিল দেন। এ সময় পাশে দাঁড়ানো জনৈক মুরুব্বি তাকে বলেন, দিনসময় ভালো না, মা তুমি এতো খুচরা টাকা নিয়ে যাবে। তারচেয়ে আমি তো ব্যাংকে বড় টাকা জমা দিব, তোমার নোটগুলো আমি বড় করে দেই। লিপি প্রথমে রাজী না হলেও পরে রাজী হন।
এ সময় প্রতারক এক হাজার টাকার নোটের বান্ডিল দেখিয়ে তার ভ্যানিটি ব্যাগে টাকাগুলো ঢুকিয়ে দেয়। লিপি ব্যাংক হতে বের হয়ে গাড়িতে উঠার সময় হঠাৎ তার সন্দেহ হয় জাল টাকা দিল কিনা। এ সময় তিনি ব্যাগ খুলে টাকা বের করে দেখেন, বান্ডিলে ৫টি এক হাজার টাকার নোট উপরে-নীচে সাজানো ও মাঝে ১০০টি একশ টাকার নোট দিয়ে সর্বমোট দশ হাজার টাকা রয়েছে। অর্থাৎ আশি হাজার টাকা প্রতারক চক্র হাতিয়ে নিয়েছে। লিপি জানান, তখনই তিনি ব্যাংকে গেলে দারোয়ান তাকে নামাযের কথা বলে ব্যাংকে ঢুকতে দেয়নি। এ সময় জোর করে ঢুকে পড়লে ম্যানেজার লিপির সাথে দুর্ব্যবহার করে তাকে ব্যাংক হতে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দেন বলে লিপি অভিযোগ করেন। লিপি আরো জানান, এ সময় সিসি ক্যামেরায় ছবি দেখতে চাইলে ম্যানেজার বলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ শুধু ব্যাংকের লোকজনের দেখার জন্য, গ্রাহকদের দেখানো যাবে না। পরে বিকেলে থানার লোকজনের সাথে যোগাযোগ করলে ব্যাংক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে প্রতারকদের ছবি বের করে দেন। ব্যাংকের ফুটেজের ছবিগুলোও তেমন পরিস্কার না।
সর্বাধিক লেনদেনকারী ইসলামী ব্যাংকে এ ধরণের প্রতরণার ঘটনা শহরে ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। তাছাড়া প্রতারণার শিকার ব্যাংকের গ্রাহক লিপি খাতুনকে সহানুভূতির পরিবর্তে ব্যাংক ম্যানেজারের দুর্ব্যবহারের ঘটনা জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে ব্যাংকের ম্যানেজার আব্দুল মতিন প্রতারণার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। সিসি ক্যামেরায় ধারণকৃত দুই দাঁড়িওলাকে শুধু ওই মহিলার পাশাপাশি দেখা গেছে এবং প্রতারকরা ব্যাংকের কোনও কাউন্টারেই লেনদেন করেননি বলে তিনি জানিয়েছেন। ব্যাংকের পক্ষ হতে বুধবার দুপুর পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ বা থানায়ও কোন অভিযোগ করা হয়নি বলে জানা গেছে। তবে লিপি বুধবার থানায় অভিযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন।