শাশুড়ি-দেবরের আগুনে অনাগত সন্তানসহ লাশ হলেন পাপিয়া

মোস্তফা কামাল, কিশোরগঞ্জ: করিমগঞ্জ উপজেলার উলুখলা গ্রামের শ্বশুরবাড়িতে অগ্নিদগ্ধ পাপিয়া আক্তার (১৯) বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বার্ন ইউনিটে মারা গেছেন। গত ২ মে সকালে হাত আর মুখ বেঁধে শাশুড়ি-দেবর মিলে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় পাপিয়া চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।

Papiya-kishoreganj
শাশুড়ি-দেবরের দেওয়া আগুনে অনাগত সন্তানসহ লাশ হলেন পাপিয়া।

মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া গ্রামের কৃষক নাজির মিয়ার মেয়ে পাপিয়ার সঙ্গে দেড় বছর আগে আশিকুল হকের (২৫) বিয়ে হয়। আশিক মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পাপিয়ার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে ।

পাপিয়ার স্বজনরা জানান, আশিকের পরিবার এ বিয়ে মেনে নেয়নি। বিভিন্ন সময়ে পাপিয়ার ওপরশারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হতো। এ নিয়ে গত ২ মে স্বামীর গ্রামে সালিশ হবার কথা ছিল। এজন্য পাপিয়ার বাবাও আশিকদের বাড়িতে এসেছিলেন। কিন্তু সালিশের আগেই সকাল ৯টার দিকে ঘরের দরজা লাগিয়ে শ্বশুর আনোয়ারুল হকের উপস্থিতিতে শাশুড়ি পারুল আক্তার ও দেবর মাশেকুল হক (২২) চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা পাপিয়ার মুখ ও হাত বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।

পাপিয়ার চিৎকারে তার বাবাসহ অন্যরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে করিমগঞ্জ হাসপাতাল ও পরে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পাপিয়া মারা যান।

করিমগঞ্জ থানার ওসি বজলুর রহমান জানান, এ ঘটনায় পাপিয়ার বড়ভাই সিরাজ মিয়া বাদী হয়ে করিমগঞ্জ থানায় পাপিয়ার স্বামী আশিকুল হক, শ্বশুর আনোয়ারুল হক, শাশুড়ি পারুল আক্তার, দেবর মাশেকুল হক ও স্বামীর ফুফু বিবি হাওয়াকে আসামি করে মামলা করেছেন। ঘটনার দিনই পাপিয়ার দেবর মাশেকুল হককে গ্রেফতার করা হয়। অন্যরা পলাতক আছেন। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।