রাজশাহী কলেজে রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান পণ্ড করে দিল ছাত্রলীগ

রাজশাহী থেকে কাজী শাহেদ: রাজশাহী কলেজে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অনুমতি না নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান করায় অনুষ্ঠান পণ্ড করে দেওয়া হয়েছে। রবিবার সকালে এই অনুষ্ঠান পণ্ড করে দেয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এ সময় মাইকের তার কেটে দেওয়া হয়। কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম খান ববিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী কলেজের কয়েকজন শিক্ষককে অপমান-অপদস্থ করেছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠান না করেই আয়োজক ও অতিথিরা অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রাজশাহী কলেজের রবীন্দ্র সংগীত চর্চা কেন্দ্র রবিবার সকাল ১১টার দিকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শোভাযাত্রা বের করে। এতে কলেজের উপাধ্যক্ষ আল ফারুক চৌধুরীসহ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। শোভাযাত্রাটি নগরীর সাহেববাজার, সোনাদীঘি মোড় এলাকা প্রদক্ষিণ করে রাজশাহী কলেজ মিলনায়তনে গিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেয়। ওই অনুষ্ঠানে অতিথি বক্তা ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত ও নাট্যকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আলমগীর। প্রধান অতিথি ছিলেন কলেজের উপাধ্যক্ষ আল ফারুক চৌধুরী। এছাড়াও প্রায় ২০ জন শিক্ষক এবং তিন শতাধিক শিক্ষার্থী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, অনুষ্ঠান শুরুর কিছুক্ষণ পরেই কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম খান ববিন কয়েকজন নেতাকর্মী নিয়ে কলেজ মিলনায়তনে গিয়ে কার অনুমতি নিয়ে এই অনুষ্ঠান হচ্ছে তা শিক্ষকদের কাছে জানতে চান। এ সময় তিনি ছাত্রলীগের অনুমতি ছাড়া এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় কয়েকজন শিক্ষককে অপমান করেন। এক পর্যায়ে তার সহযোগীরা অনুষ্ঠানের মাইকের তার কেটে দেয়।

কলেজের উপাধ্যক্ষ আল ফারুক চৌধুরী বলেন, ‘ছাত্র-শিক্ষক সবাই মিলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। কলেজের ওয়েবসাইটে আগে থেকেই অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেওয়া ছিল। তারপরও ববিনের অনুমতি কেন নেওয়া হলো না, তার জন্য সে আমাদের শিক্ষকদের অপমান করে অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলে। তাই বাধ্য হয়েই অনুষ্ঠান বন্ধ করে সবাইকে নিয়ে সেখান থেকে চলে এসেছি।’

উপাধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘শিক্ষকদের এভাবে অপমান করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বিষয়টি নগর আওয়ামী লীগ নেতাদের জানানো হবে।’

রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম খান ববিন বলেন, ‘শিক্ষকরা কাউকে কিছু না জানিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। পরে অনুষ্ঠানে দর্শক না পেয়ে শিক্ষার্থীদের ডেকে অনুষ্ঠানে নিয়ে যায়। এতে শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা ফাঁকি দিয়ে অনুষ্ঠানে গিয়ে বসেছিল। বিষয়টা আমার ভালো লাগেনি। তাই অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলেছি। তবে কোনো শিক্ষককে অপমান করিনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘অনুষ্ঠানের কারণে সমাজকর্ম বিভাগের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এটা শিক্ষার্থীরা মেনে নিতে পারেনি।’