ঈশ্বরদী (পাবনা) থেকে স্বপন কুমার কুন্ডু: পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগে বিনা টিকিটে যাত্রী ভ্রমণ বেড়ে যাওয়ায় স্টেশনে ব্লক চেকিং পরিচালনার মাধ্যমে কাউন্টারগুলোতে টিকিট বিক্রি বৃদ্ধি পেয়ে স্টেশনের আয় আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে।
স্টাফ পরিচয় দিয়ে রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারী, তাদের পরিবার-পরিজন ছাড়াও এখন অনেকেই ট্রেনে টিকিট না কেটে ভ্রমণ করছে। অথচ স্টাফদেরও ট্রেনে ভ্রমণের নীতিমালা রয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তার দপ্তর।
এতে করে ট্রেনে টিকিট কেটে ভ্রমণকারী সাধারণ যাত্রীরা যাত্রীসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। যাত্রী সেবার মান বৃদ্ধি ও রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য পাকশী বিভাগীয় কর্মকর্তারা সম্প্রতি বিনা টিকিটে ভ্রমণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছেন। এ জন্য বিভিন্ন ট্রেনে কর্মকর্তা ও টিটিইদের নিয়মিত কড়াকড়িভাবে টিকিট চেকিং এর মাধ্যমে শুধু এপ্রিল মাসেই রাজস্ব আয় অর্জিত হয়েছে প্রায় ৫০ লাখ টাকা। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলোতে ব্লক চেকিং অব্যাহত রাখায় কাউন্টারে টিকিট বিক্রিও বৃদ্ধি পেয়েছে । পাকশী বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
পাকশী বিভাগের বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজারের (ডিআরএম) নেতৃত্বে অন্যান্য বিভাগীয় কর্মকর্তারা বিভিন্নভাবে যাত্রীসেবার মান বৃদ্ধির সাথে সাথে ট্রেনে এবং গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে ব্লক চেকিং শুরু করেন। গত এপ্রিল মাসে বিভিন্ন রুটে যাত্রীবাহী ১২২ টি ট্রেনে বিনা টিকিটের যাত্রীদের টিকিট চেকিং করে ৬,৯০৭টি কেসের মাধ্যমে প্রায় ৮ হাজার বিনা টিকিটের যাত্রীকে জরিমানাসহ টিকিট করানো হয়। এতে ভাড়া বাবদ ৭ লাখ ১৪ হাজার টাকা ও জরিমানা বাবদ ২ লাখ ৮৭ হাজার টাকা সব মিলিয়ে মোট ১০ লাখ ৫২ হাজার রাজস্ব আদায় করা হয়। এছাড়া পাকশী বিভাগের ৫০ জন টিটিই এপ্রিল মাসে বিভিন্ন ট্রেনে চেকিং করে ৩০,১১১ টি কেসের মাধ্যমে প্রায় ৪০ হাজার টিকিট বিহীন যাত্রীর নিকট হতে ভাড়া ও জরিমানা বাবদ ৩৭ লাখ ৩৪ হাজার টাকা রাজস্ব আদায় করেছেন। এছাড়াও ঈশ্বরদী, নাটোর, সান্তাহার, পার্বতিপুর, পোড়াদহ, আব্দুলপুর ও রাজশাহী স্টেশনে ব্লক চেকিংয়ের মাধ্যমে ৩৯৮ জন টিকিট বিহীন যাত্রীর ভাড়া ও জরিমানা বাবদ ৬১ হাজার টাকা আদায় করা হয়।
স্টেশনে ব্লক চেকিং পরিচালনা অব্যাহত রাখায় কাউন্টারগুলোতে টিকিট বিক্রি বৃদ্ধি পেয়ে স্টেশনের আয় আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। তাছাড়া বিনা টিকিটের যাত্রী প্রতিরোধে ঈশ্বরদী জংশন ও ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশন হতে জয়দেবপুর-ঢাকা পর্যন্ত বিশেষ অভিযান অব্যাহত রাখা হয়েছে। ফলে বিনা টিকিটে যাত্রীদের দৌরাত্ব এখন অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। পাশাপাশি রেলের অসাধু কর্মচারীদের অবৈধ আয়ও বন্ধ হয়েছে। টিকিটের যাত্রীদের আর ট্রেনে নাজেহাল হতে হচ্ছে না। পাকশীর বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক আফজাল হোসেন জানান, যাত্রী সেবার মান ও রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ট্রেন ও গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে ব্লক চেকিং অব্যাহত রয়েছে। এতে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি বিনা টিকিটে যাত্রী সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। এ চেকিং কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।