তিন বছরেও দলিল লেখক জাকির হোসেন হত্যা মামলার অগ্রগতি নেই

খুলনা থেকে সোহরাব হোসেন: তিন বছর পার হয়ে গেলেও  দলিল লেখক সমিতির কেন্দ্রীয় যুগ্ন মহাসচিব খান জাকির হোসেন হত্যা মামলার কোনও অগ্রগতি নেই। আর পরিবারের সদস্যরা মনে করে  আওয়ামী লীগে  যোগদান না করলে তাকে হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হতো না। ২০১২ সালের ২০ মে  কেসিসি মার্কেটে নিজ অফিসের সামনে আততায়ীর হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে খান জাকির হোসেন নিহত হয়েছিলেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক মীর আতাহার আলী জানান, এই হত্যা মামলায় ঘুরে ফিরে আওয়ামী লীগ নেতা বাহাউদ্দিন খন্দকারের নাম আসছে। এই কারণে বাহাউদ্দিনের দেহরক্ষী  অস্ত্র নিয়ে আটক জি এম ফারুখ হোসেনকে এই মামলায় শোন এ্যারেষ্ট করা হয়েছে।

নিহত খান জাকির হোসেনের স্ত্রী মোসা. জামিলা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের কথা উল্লেখ করে ঘটনার পর খুলনা থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ দীর্ঘ সময় মামলাটি তদন্ত করে। এই সময় বিভিন্ন স্থান থেকে মোট ৭ জনকে আটক করা হলেও পুলিশ কোনও স্বীকারোক্তি আদায় করতে পারেনি। পরে মামলাটির তদন্তর দায়িত্ব সিআইডির কাছে হস্তান্তর করা হয়।

নিহত খান জাকির হোসেনের পুত্র খান মাসুম হোসেন দাবি করেন তার পিতা হত্যাকাণ্ডের কয়েক মাস আগে আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছিলেন। এই যোগদানই তার কাল হয়। কারণ খান জাকির হোসেন নিজের মেধা যোগ্যতা দিয়ে স্থানীয় নেতৃত্বে চলে আসতে পারে এই কারণে দলের মধ্যেই একটি যড়যন্ত্রকারী মহল তাকে চিরতরে সরিয়ে দেয়। তিনি জানান, মামলা দায়েরকালে কোন আসামির নাম উল্লেখ করা হয়নি। অথচ ১৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন খন্দকার উচ্চ আদালত থেকে জাকির হত্যা মামলায় আগাম জামিন নিয়েছেন। খান মাসুম আরো জানান, তার পিতা হত্যার পর থেকে বাহাউদ্দিন তার পরিবারের সদস্যদের নামে বিভিন্ন হয়রানিমূলক মামলা দিয়েছে আর কৌশলে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে থানায় একাধিক জিডি করেছে। খান মাসুম দাবি করেন পিতা হত্যার বিচার চাইতে গিয়ে তার পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

সিআইডি পরিদর্শক মীর আতাহার আলীর কাছে মামলার অগ্রগতি জানতে চাইলে তিনি বলেন চার মাস আগে তারা মামলার দায়িত্ব পেয়েছেন। সেই হিসাবে দ্রুত কোনও আগ্রগতি নেই। তিনি বলেন, মামলা তদন্তকালে ঘুরে ফিরেই শুধু বাহাউদ্দিন খন্দকারের নাম আসছে, তাই খুলনা থানা পুলিশের কাছে অস্ত্রসহ আটক বাহাউদ্দিনের দেহরক্ষী জি এম ফারুক হোসেনকে এই মামলায় শোন এ্যারেষ্ট দেখানো হয়েছে। তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে অনেক রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে তার ধারণা। তিনি আরো বলেন, অস্ত্রসহ আটক এবং পুলিশের সাথে বন্দুকযদ্ধে নিহত আল মামুন ওরফে সবুজ/ শীপন জাকির হত্যার প্রধান ছিল বলে তাদের কাছে তথ্য আসছে। তিনি আশা করেন ফারুখ হোসেনকে রিমান্ডে আনলে মূল রহস্য উৎঘাটন হতে পারে।

এ ব্যাপারে ১৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন খন্দকার জানান, জাকির হত্যার পর পুলিশ তার বাড়িতে কয়েকবার গিয়েছিল। এই কারণে তাকে যাতে হয়রানি করতে না পারে সেজন্য তিনি উচ্চ আদালত হতে জামিন নিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, যেহেতু তিনি রাজনীতি করেন তাই অনেক ধরনের লোক তার কাছে আসত। আর জি এম ফারুক তার দেহরক্ষী নয় দাবি করে বলেন, ফারুক তার প্রতিষ্ঠানে কাজ করত। তিনি নিহত শিপনকে চেনেন না বলে দাবি করেন।