রংপুর থেকে জয়নাল আবেদীন: ধানের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত বিক্ষুব্ধ ও ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা রংপুরে সড়কে ধান ফেলে অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট রংপুর জেলা শাখার উদ্যোগে বুধবার সকাল ১১টায় রংপুর নগরীর সাতমাথায় এই কর্মসূচি পালন করে।
ধান চাষিদের অবরোধে প্রায় ঘন্টাব্যাপী মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের জেলা সংগঠক ও বাসদ (মার্কসবাদী) জেলা সমন্বয়ক কমরেড আনোয়ার হোসেন বাবলুর সভাপতিত্বে অবরোধ পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) রংপুর জেলা কমিটির সদস্য পলাশ কান্তি নাগ, আহসানুল আরেফিন তিতু, কৃষক ফ্রন্টের জেলা সংগঠক আনোয়ারুল ইসলাম, বাবু মিয়া, নুর ইসলাম, ক্ষতিগ্রস্ত ধান চাষি বাদশা মিয়া প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, এ বছর প্রতি মন ধান উৎপাদনে কৃষকের খরচ হয়েছে ৭০০-৭৫০ টাকা। অথচ বর্তমানে কৃষকদের বাধ্য হয়ে ৪০০-৪৫০ টাকায় প্রতি মন ধান বিক্রি করতে হচ্ছে। সরকার মন প্রতি ৮৮০ টাকা ধানের মূল্য নির্ধারণ করে ক্রয়ের ঘোষণা দিলেও কোথাও কোনও ধান ক্রয় করেনি। ফলে সর্বশান্ত হচ্ছে কৃষকরা। প্রতি বছর এভাবে ফসলের ন্যায্য মূল্য না পাওয়াই যেন কৃষকের নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ কৃষকের উৎপাদন খরচ প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে।
ক্রমাগত বন্ধ্যা বীজ, ক্ষতিকারক সার ও কীটনাশকে বাজার সয়লাভ হয়ে গেছে। অন্যদিকে ক্ষেতমজুরদের বছরে ৩ মাস কাজ থাকে, বাকি ৯ মাস কোনও কাজ নেই। অনাহার অর্ধাহার প্রায় প্রতিদিনের ঘটনা। ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য এবং শিল্পের কাঁচামালের উৎস কৃষি। অথচ প্রতি বছর জাতীয় বাজেটে সবচেয়ে বেশি অবহেলিত হয় এই কৃষিখাত। এখানে বাজেট বরাদ্দ এতই সামান্য যা এই খাতের সঙ্গে যুক্ত বিশাল জনগোষ্ঠীর সঙ্গে তামাশা করার সামিল।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ক্ষমতায় টিকে থাকা এবং যাওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতায় দুই প্রধান রাজনৈতিক জোট ব্যস্ত অথচ কৃষক-ক্ষেতমজুরদের এই ভয়াবহ সংকট নিয়ে তাদের কোন দায় নেই।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে হাটে হাটে ক্রয়কেন্দ্র খুলে সরকার ঘোষিত মূল্যে ধান ক্রয়, গরিব মানুষের মাঝে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহের জন্য রেশন কার্ডের ব্যবস্থা, কৃষি ফসল উৎপাদন খরচ কমাতে সরকারি উদ্যোগে কৃষককে ভর্তুকি প্রদান এবং উন্নয়ন বাজেটের ৪০ শতাংশ কৃষিখাতে বরাদ্দের দাবি জানান।