রবিউল হাসান রবিন, কাউখালী (পিরোজপুর): কাউখালী মহিলা কলেজ কেন্দ্রে বুধবার ২০১৫ সালের রসায়ন প্রথমপত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০১৪ সালের অনিয়মিত প্রশ্নপত্র দিয়ে। এতে কাউখালী মহাবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ৩২ পরীক্ষার্থী ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়ে বিপাকে পড়েছে। পরীক্ষার পর ভুল প্রশ্নপত্রের বিষয়টি পরীক্ষার্থীদের কাছে ধরা পড়লে পরীক্ষার্থীরা কলেজ অধ্যক্ষের কাছে এসে প্রতিকার চেয়েছে।
পরীক্ষার্থী ও কলেজ সূত্রে জানা গেছে, চলতি এইচএসসি পরীক্ষায় কাউখালী মহিলা কলেজ কেন্দ্রে বিজ্ঞান বিভাগের রসায়ন (ত্বত্ত্বীয়) প্রথম পত্রের (বিষয় কোড নম্বর ১৭৬) পরীক্ষা বুধবার সকাল ১০টায় শুরু হয়। ওই কেন্দ্রে কাউখালী মহাবিদ্যালয়ের ৩২ পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। সৃজনশীল ৪০ নম্বরের পরীক্ষা শেষ হয় ২০১৫ সালের প্রশ্নপত্রে। এরপর উত্তরপত্র সংগ্রহ শেষে ওই বিষয়ের ৩৫ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা শুরু হয়। এসময় কর্তৃপক্ষ প্রশ্নপত্র যাচাই না করে পরীক্ষার্থীদের ২০১৪ সালের প্রশ্নপত্র সরবরাহ করে। শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিকভাবে প্রশ্নপত্র বিভ্রাটের বিষয়টি বুঝতে না পেরে ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরে। বাড়িতে গিয়ে প্রশ্নপত্রের অসংগতি ধরা পড়লে তারা কলেজ অধ্যক্ষের কাছে সমবেত অভিযোগ জানায়।
এ বিষয়ে পরীক্ষার্থী খান আলীমুল রাজিব ও নাহিদ আমান তামান্না জানায়, নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষায় ২০১৫ সালের বদলে তাদের ২০১৪ সালের অনিয়মিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এতে সকল পরীক্ষার্থীর প্রস্তুতি অনুযায়ী পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়নি। সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীরা বাড়িতে গিয়ে প্রশ্নপত্র বিভ্রাটের বিষয়টি বুঝতে পারে।
প্রশ্নপত্র বিভ্রাটের বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে কাউখালী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মো. সাইয়েদুর রহমান জানান, ২০১৪ সালের অনিয়মিত রসায়ন প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরীক্ষার্থীরা অভিযোগ দিলে আমি তা খতিয়ে দেখে সত্যতা পাই। পরে বিষয়টি বরিশাল শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানকে ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি। তিনি আরও বলেন, প্রশ্নপত্র বিভ্রাটের কারণে সকল পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা খারাপ হয়েছে।
কাউখালী মহিলা কলেজের কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অধ্যক্ষ লুৎফর রহমান বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ভুলবশত নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন পরীক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ আমাকে প্রশ্নপত্রের যে প্যাকেট দিয়েছে তা দিয়ে পরীক্ষা নিয়েছি। পরীক্ষাশেষে ভুল ধরা পড়ে।
কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পরীক্ষার তত্ত্ববাবধায়ক মো.শহীদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ভুলে ২০১৫ সালের পরিবর্তে ২০১৪ সালের অনিয়মিত পরীক্ষার্থীদের নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষায় রসায়ন প্রথমপত্রের প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিষয়টি বরিশাল বোর্ড কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
কাউখালীতে প্রাক-বাজেট আলোচনা সভা
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কাউখালী শাখার উদ্যোগে ২০১৫-২০১৬ জাতীয় বাজেটে নারী-পুরুষের সমতার লক্ষ্যে প্রাক-বাজেট আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার সংগঠনের সভাপতি জাহানূর বেগমের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মিঠু, কাউখালী সদর ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রশিদ মিল্টন, আমরাজুড়ী ইউপি চেয়ারম্যান কৃষ্ণলাল গুহ, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুনন্দা সমদ্দার,প্র ধান শিক্ষক গৌতম কুমার দাস, লিগ্যাল এইড সম্পাদক শাহীদা হক, আন্দোলন সম্পাদক মুকুল বেগমসহ অন্যরা। মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যক্ষ রতন কুমার ঘোষ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মিনতী দাস।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, বাজেট বাস্তবায়নের জন্য সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ যেমন নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে শিক্ষা, প্রযুক্তি, প্রশিক্ষণ, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, নিরাপত্তা ইত্যাদি ক্ষেত্রে বাজেট বৃদ্ধির মাধ্যমে উন্নয়ন ও বিদ্যমান বৈষম্য দূর করা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে জাতীয় পর্যায়ের মনিটরিং সেল গঠন করা যেতে পারে। নারীর অস্বীকৃত কাজের অর্থনৈতিক স্বীকৃতি প্রদান, গণপরিবহনে বিনিয়োগ বাড়ানো, শিশুর দিবাযত্নকেন্দ্র তৈরি, সমমজুরিসহ বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরা হয়।