ঈশ্বরদী (পাবনা) থেকে স্বপন কুমার কুন্ডু: প্রকৃতি যেন রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে। চৈত্র পেরিয়ে বৈশাখ। বৈশাখও শেষ হয়ে জ্যৈষ্ঠ। প্রচণ্ড খরতাপে পুড়ছে ঈশ্বরদীসহ উত্তরাঞ্চলবাসী। কখন নামবে অঝোর ধারায় বৃষ্টি- এমন প্রত্যাশায় ঈশ্বরদীর পদ্মা তীরবর্তী মানুষগুলো চাতক পাখির মতো আকাশের পানে চেয়ে আছেন। বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠের দাবদাহে খাঁ খাঁ করছে ঈশ্বরদীসহ উত্তরাঞ্চল। ঠা ঠা রোদ্দুরে পুড়ছে এই অঞ্চলের জনজীবন। কর্মজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা।
প্রচণ্ড গড়মে মানুষের পাশাপাশি পশু-পাখিরাও কাহিল হয়ে পড়েছে। মাঠ-ঘাট, বাসা-বাড়ি কিংবা অফিস-আদালত সবত্রই ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। ঈশ্বরদীতে চলতি মে মাসে গড় বৃষ্টিপাদের পরিমান মাত্র ১৬.৬৭ মিলিমিটার। অতি সামান্য এই বৃষ্টিপাতে পিপাসার্ত ধরা ধামের তৃষ্ণা মেটেনি। আগুনঝরা সূর্যের তাপে পুড়ছে মানুষ, পুড়ছে প্রকৃতি।
গরমে দিনে-রাতে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বেলা ১১টার পর থেকে পথে-ঘাটে আগুনের মতো হল্কা চোখ, মুখ ও শরীর যেন পুড়িয়ে দেয়। দুপুর ১টার পর হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পথ-ঘাট প্রায় জনশুণ্য হয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার ইশ্বরদীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৭.৮ ডিগ্রি। সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য কমে যাওয়ায় বেশি গরম অনুভূত হচ্ছে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।
চলতি সপ্তাহে এই তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠতে পারে। আবহাওয়া অফিস জানায়, চলতি মাসে ২/৩টি নিম্নচাপ ঘণীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তর হতে পারে। এছাড়া উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে একাধিক কালবৈশাখিসহ বজ্রবৃষ্টি হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
এ দিকে তীব্র দাবদাহে ঈশ্বরদী হাসপাতালে বেড়েছে ডায়ারিয়া, আমাশয়সহ নানা রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। রাস্তা-ঘাটে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে হিট ষ্ট্রোকে।
পদ্মা নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে বেলা বাড়ার সাথে সাথে মরু অঞ্চলের মতো গরম লু হাওয়া প্রবাহিত হচ্ছে।