সিস্টেম লসের অজুহাতে শতমণ চাল কম পেল কলাপাড়ার জেলেরা, বিশেষ বরাদ্দে অনিয়ম

মিলন কর্মকার রাজু, কলাপাড়া (পটুয়াখালী): সিস্টেম লস দেখিয়ে কলাপাড়ার নীলগঞ্জ ইউনিয়নে চারশ’ জেলেকে বিশেষ ভিজিএফ-এর ১০-১২ কেজি করে চাল কম দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইউনিয়ন পরিষদে এ চাল বিতরণের নিয়ম থাকলেও শনিবার কলাপাড়া পৌর শহরে বসে এ চাল বিতরণ করে প্রায় ১০০ মণ চাল ওজনে কম দেওয়া হয়েছে। চাল বিতরণে দায়িত্বরত ট্যাগ অফিসার উপস্থিত থাকলেও তিনি এ ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ নেননি।

অভিযোগে জানা যায়, ৪০ কেজি করে দু মাসে জেলেরা ৮০ কেজি করে চাল পাওয়ার কথা। জাটকা নিধনরোধে জেলেদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এ চাল বিতরণ করা হয়। কিন্তু প্রতি জেলেকে ৬৮ থেকে ৭১ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। অনেক কার্ডপ্রাপ্ত জেলের নাম তালিকায় থাকলেও তারা চাল পায়নি।

জেলেদের অভিযোগ, যারা প্রকৃত জেলে এবং সাগর-নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা এবার চাল পাননি। অনেকের নাম তালিকায় নেই, তারা এ সুবিধা পেয়েছেন। সলিমপুর গ্রামের জেলে আবদুল মতিন জানান, তিনি সাড়ে ৫১ কেজি চাল পেয়েছেন। তার নামের বাকি চাল অন্য এক জেলেকে দেওয়া হয়েছে। গামইরাতলা গ্রামের রাজ্জাক কাজী জানান, তার নাম তালিকায় থাকলেও তিনি চাল পাননি। একই কথা বলেন, জালালপুর গ্রামের দুলাল খাঁ, রহমতপুর গ্রামের বেল্লাল হোসেন, আল আমিন খান, রুহুল আমিন হাওলাদার, রাহিমা বেগম।

জেলে আল আমিন খান বলেন, গতবার তিনি এ সহায়তার চাল পেয়েছেন। কিন্তু তাকে এবার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। একাধিক জেলে জানান, তারা গতবারও চাল কম পেয়েছেন কিন্তু এবার বেশি কম দেওয়া হয়েছে। ৮০ কেজি চাল থেকে ১০-১২ কেজি চাল রেখে দেওয়া হয়েছে। তাদের বলা হয়েছে চাল আনতে অনেক খরচ তাই এবার কম পাবেন।

এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য জগৎজীবন রায় বলেন, গুদাম থেকে চাল আনতে সিস্টেম লসসহ পরিবহন খরচ অনেক। তাই তারা ৭৪ কেজি করে চাল দিয়েছেন।

দায়িত্বরত ট্যাগ অফিসার মো. এনায়েত কবির বলেন, তিনি ৭৪ কেজি করে চাল দিতে দেখেছেন। এরচেয়ে কম দিতে দেখেননি। তবে ৮০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও কেন কম দেওয়া হয়েছে তিনি তা জানাতে পারেননি।

এ ব্যাপারে নীলগঞ্জ ইউনিয়ন প্যানেল চেয়ারম্যান মো. রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, আমরা ৭৩-৭৪ কেজি করে চাল দিয়েছি। পরিবহন ব্যয় ও ঘাটতি পূরণ করতে এ চাল ওজনে কম দেওয়া হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম জানান, প্রতি জেলে ৪০ কেজি করে ৮০ কেজি চাল পাবে। চাল ইউনিয়ন পরিষদে বসে দেওয়ার কথা। কেন চাল কম দেওয়া হয়েছে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে জানান।