খুলনা বিভাগে পরিবহন ধর্মঘটে দুর্ভোগে যাত্রীরা, ট্রেনই ভরসা

সোহরাব হোসেন, খুলনা: তিন দফা দাবিতে ষষ্ঠ দিনের মতো খুলনা-আরিচা-ঢাকা রুটে দূরপাল্লার বাস ধর্মঘট অব্যাহত রয়েছে। দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা।

শুক্রবার (২২ মে) থেকে আন্তঃজেলা পরিবহন ধর্মঘটের কারণে বন্ধ রয়েছে আঞ্চলিক রুটের বাসগুলোও। কেউ কেউ ট্রেন ধরে কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারলেও পথের ভোগান্তি নেহাতই কম নয়। অনেকেই বিকল্প মাধ্যম হিসেবে মাহেন্দ্র ও ইজিবাইকে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাচ্ছেন। এ জন্য গুণতে হচ্ছে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি অর্থ। আবার কেউ কেউ যাত্রাপথের এ যুদ্ধে হার মেনে যাত্রা বাতিল করে বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

অনির্দিষ্টকালের এ পরিবহন ধর্মঘটের কারণে ট্রেনই এখন দূরের যাত্রীদের একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সিট না পেলেও দাঁড়িয়েই গন্তব্যস্থলের দিকে রওনা দিচ্ছেন। আবার অনেকেই টিকেট না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।

রোববার (২৪ মে) সকালে খুলনা রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, কাউন্টারের সামনে টিকেটপ্রার্থীদের লম্বা লাইন। এদের মধ্যে কেউ এসেছেন রোববারের টিকেট নিতে, কেউ এসেছেন সোমবারের টিকেটের জন্য আবার কেউ এসেছেন তার পরের দিনের টিকেটের জন্য। কিন্তু অসহ্য গরমে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে শেষ পর্যন্ত অধিকাংশ টিকেট প্রার্থীকেই খালি হাতে বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে।

প্রায় দেড় ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও টিকেট না পেয়েই বাড়ি ফিরে যান রফিক নামে এক যাত্রী।

টিকেট কালোবাজারী হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাকার ট্রেনের একটি টিকেটের জন্য দুইদিন ধরে ঘুরছি। কিন্তু প্রতিদিনই খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।

এদিকে বাস ধর্মঘটের কারণে ট্রেনের টিকেটের ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন টিকেট বুকিং সহকারীরা।

খুলনা বাস-মিনিবাস কোচ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সোনা জানান, পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ডাকা অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট খুলনা বিভাগে অব্যাহত রয়েছে। দাবি আদায়ে আগামী সোমবার (২৫ মে) পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ পরিবহন সংস্থা যশোরের সভাপতি আজিজুল আলম মিন্টু জানান, সোমবার রাতে ঢাকার গাবতলী থেকে সোহাগ পরিবহনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত একটি বাস বেনাপোলের উদ্দেশ্যে যাত্রী নিয়ে রওনা দেয়। বাসটি ফরিদপুরে পৌঁছালে এতে ডাকাতি হয়। এর পর বাসের চালক যাত্রীদের নিয়ে ফরিদপুরের মধুখালী থানায় মামলা করতে যান। কিন্ত ওসি মামলা না নিয়ে টালবাহানা শুরু করেন। এরপর পুলিশ সুপারের নির্দেশে তিনি চালক আয়নাল ও চেকার রবিউল ইসলামকে আটক করেন।

তিনি জানান, আটক দু’শ্রমিককে নিঃশর্ত মুক্তি, ফরিদপুরের পুলিশ সুপার ও মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারে দাবিতে বৃহস্পতিবার (২১ মে) বিকেল ৫টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিলো। প্রশাসন তাদের দাবি না মানায় ঢাকাগামী পরিবহন ধর্মঘটের পাশাপাশি শুক্রবার থেকে আন্তঃজেলা পরিরহন ধর্মঘট পালন করছেন তারা।