জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নীতিমালার সমর্থন নিয়ে কৃষি খাত ক্রমশ বহুজাতিক কোম্পানির দখলে চলে যাচ্ছে। সারা বিশ্বের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিরা বহুজাতিক কোম্পানির আগ্রাসনে টিকে থাকার লড়াই করে যাচ্ছে। ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদেরকে সমবায়ের আওতাভুক্ত করে কৃষিপণ্যের বিকল্প বাজারব্যবস্থা গড়ে তুললে মধ্যস্বত্বভোগীর হাত থেকে কৃষক ও ভোক্তা উভয়ই রক্ষা পাবে।
সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত দক্ষিণ এশীয় খাদ্য নিরাপত্তা সম্মেলনের ‘বাণিজ্যিক কৃষির বিকল্প: বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনামের অভিজ্ঞতা’ নিয়ে আয়োজিত এক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
কর্মশালায় বলা হয়, রাসায়নিক সার ও বালাইনাশক নির্ভর সবুজ বিপ্লব, বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার কৃষিচুক্তি ও মেধাস্বত্ব চুক্তিসহ দেশীয় এবং বৈশ্বিক নীতি কৃষিখাতে বহুজাতিক কোম্পানির দখলদারিত্বের সুযোগ করে দিচ্ছে। বিকল্প কোনও সুরক্ষার উদ্যোগ না থাকায় কৃষকরা দিন দিন আরও প্রান্তিক অবস্থানে চলে যাচ্ছে।
কর্ম-অধিবেশনে বক্তারা বলেন, পৃথিবীর বহু দেশে খোদ সরকারই ক্ষুদ্র কৃষকদের সমবায় গড়ে তুলে উৎপাদিত পণ্য সরাসরি ভোক্তার কাছে পৌছে দেয়ার ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। বক্তারা ভারত, পাকিস্তান, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশে গবেষণায় প্রাপ্ত বিকল্প বাজারব্যবস্থার উদাহরণ উপস্থাপন করে বলেন, বেসরকারি সংগঠন ও কৃষকদের নিজ উদ্যোগে কোথাও কোথাও এ ধরনের ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। তাই দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পর্যায়ে বিকল্প কৃষিপণ্য বিপণনব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব। বক্তারা দরিদ্র জনসাধারণের খাদ্য নিরাপত্তা ও জীবন-জীবিকা নিশ্চিত করা এবং দারিদ্র্য দূর করার জন্য সার্কের আওতায় কৃষকদের সমবায় ও বিকল্প বিপণনব্যবস্থা গড়ে তোলার দাবি জানান।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি-বাংলাদেশ), এশীয় খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (এএফএসএন), আন্তর্জাতিক খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (আইএফএসএন), ইনসিডিন বাংলাদেশ ও একশনএইড যৌথভাবে কর্মশালাটি আয়োজন করে।
কর্মশালায় ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন উন্নয়ন ধারার নির্বাহী পরিচালক কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম। অতিথি ছিলেন আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ইরি) সাবেক কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ ড. জয়নুল আবেদীন, ঢাকা স্কুল অব ইকোনোমিক্সের সহযোগী অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম, ভারতের সমীর গর্গ, ব্যোমকেশ কুমার লাল এবং পাকিস্তানের নাসির আজিজসহ অন্যরা। কর্মশালায় সঞ্চালনা করেন একশনএইড-বাংলাদেশের পরিচালক আসগর আলী সাবরী। বিজ্ঞপ্তি