শেরপুর থেকে এম. সুরুজ্জামান: মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, মুক্তিযুদ্ধকালীন সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের অন্যতম সদস্য, ভাষাসৈনিক আব্দুর রশীদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী ৫ জুন শুক্রবার পালিত হয়েছে।
এ উপলক্ষে পরিবারের পক্ষ থেকে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্যে ছিলো-কোরানখানি, কবর জিয়ারত, মরহুমের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ। এছাড়া বাদ জুমা শেরপুর সরকারি শিশু পরিবারে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল শেষে এতিম বালিকাদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয়। এসব কর্মসূচিতে শেরপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ছানুয়ার হোসেন ছানু, পৌর মেয়র হুমায়ুন কবীর রুমান, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মো. মহসীন আলীসহ মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিক, সংস্কৃতিকর্মী ও সুধীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
ভাষাসৈনিক আব্দুর রশীদ ছাত্রাবস্থায় ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। এরপর ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট, ৬২’র শিক্ষা কমিশন আন্দোলন, ৬৯’র গণঅভ্যূত্থান, ৭০’র নির্বাচন, ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে অবদান রাখেন। আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনের সময় কারারুদ্ধ হন। ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হলে এর প্রতিবাদ করায় তৎকালীন সরকার তাকে ময়মনসিংহ জেলা কারাগারে ৯ মাস কারারুদ্ধ করে রাখেন।
আজীবন সংগ্রামী সাবেক এই ন্যাপ নেতা তার সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ দেশ বরেণ্য বিভিন্ন রাজনীতিবিদের সান্নিধ্যলাভ করেন। অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির প্রবক্তা আব্দুর রশীদ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার, আলবদর ও জামায়াত-শিবির এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন করেছেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি শেরপুর জেলা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। ২০১৪ সালের ৫ জুন ভোরে ৮৪ বছর বয়সে বার্ধক্যজনিত কারণে শহরের গৃদানারায়নপুর নিজ বাসভবনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।