কলাপাড়া (পটুয়াখালী) থেকে মিলন কর্মকার রাজু: শিক্ষকের ডাকে সাড়া না দেওয়ার অপরাধে বিদ্যালয়ের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা চালাকালীন হলে প্রবেশ করে বেত্রাঘাত করে সাত পরীক্ষার্থীকে আহত করেছে শিক্ষক মাইনুল হক। গুরুতর আহত ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র হিরনকে কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি ও সপ্তম শ্রেণির ছাত্র মিলন, সোহাগ, নুরছায়েদ, সোহাগ ও দশম শ্রেণির তুহিন ও প্রিন্সকে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষকের মারধরের কারনে আহত ছাত্ররা আজ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। আকস্মিক হলে ঢুকে শিক্ষকের এমন মারধরে পরীক্ষার হলে উপস্থিত ছাত্রদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার চম্পাপুর ইউনিয়নের উত্তর পূর্ব পাটুয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সোমবার সকাল সাড়ে দশটায় এ ঘটনা ঘটেছে।
আহত ছাত্ররা জানান, রবিবার বিকালে পরীক্ষা চলাকালীন হিরনসহ কয়েক ছাত্র পরীক্ষা হলের বারান্দায় হাঁটাচলা করায় শিক্ষক মাইনুল হক তাদের ডাক দেন। এতে ভয়ে ছাত্ররা দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। সোমবার সকালে শারীরিক শিক্ষা পরীক্ষা চলাকালীন শিক্ষক মাইনুল হক ছাত্রদের কাছে গিয়ে কাল তার ডাকে কেন দাঁড়ায়নি তা জানতে চান। ভয়ে ছাত্ররা কোনও সদুত্তর দিতে না পারায় তিনি তাদের বেত্রাঘাত করতে থাকেন। এ সময় গোটা পরীক্ষার হলে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। একই হলে দায়িত্বরত সহকারী শিক্ষক সেলিম হাওলাদার ও মাওলানা হানিফ উপস্থিত থাকলেও ওই শিক্ষকে মারধর করতে নিষেধ না করে উল্টো শিক্ষার্থীদের গালাগাল করেছেন বলে আহত ছাত্ররা জানিয়েছে।
একাধিক অভিভাবক জানান, প্রচণ্ড বেত্রাঘাতে ছাত্রদের সারা শরীর কালো হয়ে গেছে। আজ পরীক্ষা পর্যন্ত দিতে পারেনি। ছেলেরা যদি কোন দোষ করত তাহলে পরীক্ষার পর তাঁদের ডেকে শাস্তি দিত। পরীক্ষা চলাকালীন কেন এমন নির্দয়ভাবে পিটানো হলো।
এ ব্যাপারে শিক্ষক মাইনুল হক বলেন, পরীক্ষা চালাকালীন তাদের মারধর করা ভুল হয়েছে। তবে ওই ছাত্ররা আগের দিন বিকালে অন্য ছাত্রদের নকল সরবরাহ করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এ কারনেই তিনি মারধর করেছেন।
প্রধান শিক্ষক মো. বজলুর রহমান জানান, তিনি মারধরের কথা শুনে আহতদের দেখতে হাসপাতালে আছেন। কি কারনে মারধর করা হয়েছে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী রুহুল আমিন জানান, তিনি একটি মিটিংয়ে ঢাকায় আছেন। খোঁজ নিয়ে ঘটনার সত্যতা পেলে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।