খুলনা প্রতিনিধি: পাটখাতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ, বকেয়া মজুরি ও বেতন পরিশোধসহ পাঁচ দফা দাবিতে খুলনাঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ব নয়টি পাটকলে ধর্মঘট শুরু হয়েছে। সোমবার (৮ জুন) সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘট চলবে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত।
রাষ্ট্রায়ত্ব জুট মিল সিবিএ-নন সিবিএ ঐক্য পরিষদ এ কর্মসূচি পালন করছে। এর ফলে খুলনার ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, স্টার, খালিশপুর, দৌলতপুর, আলীম, ইস্টার্ন জুট মিল, এবং যশোরের জেআই ও কার্পেটিং জুট মিলে উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে।
রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. সোহরাব হোসেন জানান, ধর্মঘটের ফলে খুলনাঞ্চলের নয়টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে শতভাগ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
তিনি আরও জানান, একই দাবিতে ১০ জুন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত নগরীর হাদিস পার্কে অনশন কর্মসূচি পালন করা হবে। এছাড়া ১৪ জুন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৪ ঘণ্টা রাজপথ-রেলপথ অবরোধের কর্মসূচি রয়েছে।
ধর্মঘট পালনকারী শ্রমিকরা জানান, রাষ্ট্রায়াত্ব পাটকলের ব্যাপারে সরকার বেশকিছু অর্থনৈতিক সহায়তা ও কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিলেও তার মনিটরিং না থাকায় পাট ও পাট শিল্প বর্তমানে পুনরায় গভীর সংকটে পড়েছে। শ্রমিক-কর্মচারীরা সময়মত তাদের পাওনা না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এমনকি তারা চাকুরি হারানোর ঝুঁকিতেও রয়েছেন।
তারা আরও জানান, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ‘আর কোনও রাষ্ট্রায়ত্ব শিল্পকে ব্যক্তি মালিকানায় হস্তান্তর হবে না’ উপেক্ষা করে খুলনার আলীম জুট মিল ব্যক্তি মালিকানায় ছেড়ে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। সার্বিক বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন পাটকল শ্রমিকরা।
শ্রমিকরা বলেন, দেশের প্রায় তিন কোটি মানুষের জীবন-জীবিকার উৎস রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল রক্ষার বিকল্প নেই। খুলনাঞ্চলের নয়টি রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকলের মেশিন ও যন্ত্রপাতি দীর্ঘ দিনের ও অকেজো। এগুলো যুগের চাহিদা অনুযায়ী আধুনিকায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। পাট ও পাটশিল্পের সুরক্ষা দেওার জন্য ও পরিবেশ বাঁচানোর জন্য ২০০২ সালে পলিথিনের কাঁচামাল আমাদানি নিষিদ্ধের আইন করা হয়েছিল কিন্তু তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। অবিলম্বে পাটজাত পণ্য দেশের অভ্যন্তরে ব্যবহার করার জন্য ম্যান্ডেটরি প্যাকেজিং আইন-২০১০ বাস্তবায়নের দাবি জানান তারা।