প্রতিনিধি, বাগেরহাট: স্বামীকে হত্যা করে গোসলখানায় লাশ মাটি চাপা দিয়ে সেই কবরের উপরে টানা তিন মাস গোসল করেছেন স্ত্রী। হত্যাকাণ্ডের তিন মাস পর আজ বৃহস্পতিবার ভোরে পুলিশ মাটি খুঁড়ে লাশ উদ্ধার করেছে। মোরেলগঞ্জের দক্ষিণ কুমারিয়াজোলা গ্রামের ঘটনা এটি।
পুলিশ এ ঘটনায় স্ত্রী ফাতেমা বেগমকে (৪০) গ্রেফতার করেছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে। পরকীয়া প্রেমের কারণে এ খুন হয় বলে জানায় পুলিশ। নিহত আল-আমিন শেখের (৫৫) ভগ্নিপতি মোবারক হোসেন বাদী হয়ে দুজনকে আসামি করে বৃহস্পতিবার মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, মোরেলগঞ্জের দক্ষিণ কুমারিয়াজোলা গ্রামের চার সন্তানের বাবা আলামিন শেখ ঢাকায় রিকশা চালাতেন। গত ১৬ মার্চ রাতে তিনি বাড়িতে আসেন। ওই রাতেই স্ত্রী ফাতেমা বেগমের হাতে খুন হন তিনি। স্বামীকে হত্যার পর রাতেই ফাতেমা বেগম তার প্রেমিক প্রতিবেশী শাহাজান শেখের (৫০) সহযোগিতায় লাশ গোসলখানায় মাটি চাপা দিয়ে রাখেন। হত্যার ঘটনা যাতে কারো নজরে না আসে সে জন্য ওই গোসলখানায়ই নিয়মিত গোসল করতেন ফাতেমা বেগম।
প্রথমিক জিজ্ঞাসাবোদে ফাতেমা বেগম স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তার উদ্ধৃতি দিয়ে পুলিশ জানায়, ওই রাতে ঝগড়াঝাটির এক পর্যায়ে গুপ্তি (ধারালো অস্ত্র) স্বামীর বুকে বসিয়ে দেন ফাতেমা। কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান আল-আমিন।
আল-আমিন শেখের ছেলে মোহাম্মদ আলী তার পিতার নিখোঁজের খবর জানিয়ে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানায় ২ এপ্রিল একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, আল-আমিন শেখকে হত্যা করে বাড়ির মধ্যেই কোথাও লাশ গুম করে রাখা হয়েছে এমন সন্দেহের ভিত্তিতে পুলিশ অনুসন্ধান চালায়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ফাতেমা বেগম স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন এবং লাশ গুম করে রাখার স্থান দেখিয়ে দেন। এ ঘটনায় নিহতের ভগ্নিপতি মোবারক হোসেন বাদী হয়ে দুজনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেছেন বলে জানান তিনি।
ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
বাগেরহাট পুলিশ সুপার মো. নিজামুল হক মোল্যা জানান, আলামিনের নিখোঁজের বিষয়টি সন্দেহজনক হলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালায়। ফাতেমার স্বীকোরোক্তি অনুযায়ী রান্নাঘরের পাশের ইট বিছানো গোসলখানার নিচে মাটি খুঁড়ে আল-আমিন শেখের লাশ উদ্ধার করা হয়।