রাজশাহী থেকে কাজী শাহেদ: রাজশাহীজুড়ে প্রতারণার ফাঁদ পেতে চাকুরির নামে বেকারদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক চক্র। আরবান হেলথ কেয়ার লিমিটেড ও ফ্রেস গ্রুপের নামে চলছে এ প্রতারণা। রাজশাহীর কাদিরগঞ্জে ফ্রেস গ্রুপ ও চারখুটার মোড়ে আরবান হেলথ কেয়ার লিমিটেড অফিস খুলে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে নিঃস্ব হওয়া চাকরিপ্রত্যাশিরা এখন দিশেহারা।
নাটোরের আমিনুল ইসলাম নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে আবেদন করেছিলেন ফ্রেস গ্রুপে। সংস্থাটির ঠিকানা দেওয়া হয়েছে ৩৮২, মগবাজার মোড়, এনসিসি ব্যাংকের চতুর্থ তলা, ঢাকা। ওই ঠিকানায় আবেদনের পর গত ৬ জুন আমিনুলকে নিয়োগ দেওয়া হয় রাজশাহীতে সহকারী ম্যানেজার পদে। তিনি সোমবার রাজশাহীতে আসার পর সংস্থাটির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার সাব্বির আহম্মেদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সাব্বির আহম্মেদ তাকে দু’টি মোবাইলের (০১৭২৪-৩১১৮৯৮ ও ০১৯১৯-০০৯০৯৪) নম্বর দিয়ে ১৫ হাজার টাকা বিকাশ করতে বলেন। আমিনুল তার কাছে রাজশাহী অফিসের ঠিকানা জানতে চাইলে তাকে আবারও বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর কথা বলা হয়।
শুধু আমিনুল ইসলাম নন, তার মতো শতাধিক যুবক ফ্রেস গ্রুপ নামের ওই প্রতারক সংস্থার কবলে পড়েছেন। অনেকে তাদের দেওয়া নম্বরে বিকাশ করে টাকা পাঠিয়েছেন।
ফ্রেস গ্রুপের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার পরিচয় দেওয়া সাব্বির আহম্মেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, রাজশাহী কাদিরগঞ্জ এলাকার স্বপ্নীল ভবনে তাদের অফিস। তারা বিভিন্ন পণ্য বাজারজাত করেন। পণ্যের নাম জানতে চাইলে তিনি মোবাইলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এরপর ফোন রিসিভ করা বন্ধ করে দেন। তবে গতকাল তার দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী স্বপ্নীল ভবনে গিয়ে ওই অফিসের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
এদিকে নগরীর চারখুটার মোড়ে আরবান হেলথ কেয়ার লিমিটেড নামের আরেকটি সংস্থা খুলে যুবকদের সঙ্গে প্রতারণা চলছে। চাকুরি দেওয়ার নামে তাদের কাছ থেকে জামানত হিসেবে ৪ হাজার ২৫০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। ইউনিয়ন সুপারভাইজার পদে ৯০ জনকে নিয়োগ দিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে কয়েক লাখ টাকা। এছাড়া অন্যান্য পদেও চলছে নিয়োগ প্রক্রিয়া।
প্রতারিত হওয়া রাজশাহী কোর্ট এলাকার রাবেয়া খাতুন জানান, ইউনিয়ন সুপারভাইজার পদে নিয়োগ পেয়ে তিনি ৪ হাজার ২৫০ টাকা দিয়েছেন। চার মাস আগে টাকা দিলেও তাকে কোনো কাজ বা বেতন দেওয়া হয়নি। স্থানীয় নার্গিস জহুরা নামের এক নারী সংস্থাটি পরিচালনা করছেন।
নার্গিস জহুরা জানান, তিনি নিজেও প্রতারণার শিকার হয়েছেন। সংস্থাটির ঠিকানা ২৯১, ফকিরাপুল (জমিদার বাড়ি), মতিঝিল, ঢাকা। আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক হিসেবে অনেককে নিয়োগ দেওয়ার পর তিনি জানতে পারেন, সংস্থাটি তার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তাকে দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়েছে। তিনি সংস্থাটির চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের নামে দুদকে অভিযোগ করেছেন বলে জানান।