শেরপুর থেকে হাকিম বাবুল: শেরপুরে কসমেটিকসের দোকানে মোবাইল কোর্টের জরিমানার প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পরে ব্যবসায়ীরা। দোকানপাট বন্ধ করে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে জরিমানাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে শেরপুর থেকে প্রত্যাহারের দাবি জানায় ব্যবসায়ীরা। সোমবার বিকেল ৩ টার দিকে শহরের শহীদ বুলবুল সড়কে এ ঘটনা ঘটে। পরে জেলা প্রশাসকের বাংলোয় জেলা প্রশাসক ও কালেক্টরেটের ম্যাজিস্ট্রেটদের সাথে চেম্বার ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের বৈঠকের মাধ্যমে তিন ঘন্টা পর বিকাল ৬ টার দিকে ব্যবসায়ীরা সড়ক অবারোধ তুলে নিলে স্বস্তি ফিরে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকাল তিনটার দিকে শেরপুর কালেক্টরেটের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তসলিমা নূর সঙ্গীয় ফোর্স ও বিএসটিআইর সহকারী পরিচালক রফিকুল ইসলামকে নিয়ে শহরের শহীদ বুলবুল সড়কে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় ‘সুন্দরী কসমেটিকস’ নামে ছোট্ট একটি কসমেটিকসের দোকানে অভিযান চাািলয়ে বেশ কিছু নকল ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ লিপস্টিকসহ বিভিন্ন কসমেটিকস জব্দ করা হয়। সেইসাথে ভোক্তা অধিকার আইনে ওই কসমেটিকসের দোকান মালিক সুমন সুরকে ৭ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ছোট্ট একটি কসমেটিকসের দোকানে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে ৭ হাজার টাকা জরিমানাকে অস্বাভাবিক হিসেবে আখ্যায়িত করে শহীদ বুলবুল সড়কের ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা দোকানপাট বন্ধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন এবং গোয়ালপট্টি মোড় ও টাউন হল মোড়ে টায়ারে আগুন জ্বালিেেয় সড়কে অবস্থান করে অবরোধ করেন। এতে শহীদ বুলবুল সড়ক, গোয়ালপট্টি সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অবস্থা বেগতিক দেখে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনাকারী ম্যাজিস্ট্রেট ও তার গাড়ীবহর দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। সংবাদ পেয়ে সদর থানার ওসি মাজহারুল করিমের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়। ছুটে আসেন চেম্বার ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দরা। বিষয়টি নিয়ে শেরপুর চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি আসাদুজ্জামান রওশন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাকীর হোসেনের সাথে কথা বললে দ্রুত বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য জেলা প্রশাসক ব্যবসায়ী ও চেম্বার নেতৃবৃন্দকে তার বাংলোয় বৈঠকের আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে শেরপুর চেম্বারের সহ-সভাপতি হাজী হায়দার আলী বলেন, আমরা মোবাইল কোর্টের বিরোধী নই। কিন্তু ওই মহিলা ম্যাজিস্ট্রেট এর আগেও মোবাইল কোর্টের নামে অস্বাভাবিক জরিমানা করে ব্যবসায়ীদের অসম্মান করেছে। এবারও ছোট্ট দোকানে অস্বাভাবিক জরিমানা করেছে যার আসলে পুঁজিই খুব অল্প। আমরা তাকে শেরপুর থেকে প্রত্যাহারের জন্য জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি। তাছাড়া জেলা প্রশাসক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের সামনেই আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, ভবিষ্যতে সহনীয়ভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। পরে ব্যবসায়ীরা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি তুলে নেয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাকীর হোসেন বলেন, ব্যবসায়ী ও চেম্বার নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে মোবাইল কোর্ট নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হওয়ায় বিষয়টি সম্মানজনক সমাধান করা হয়েছে।
শেরপুর সদর থানার ওসি মাজহারুল করিম বলেন, জেলা প্রশাসকের সাথে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের আলোচনার পর সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার হয়েছে।