সরকারের কাছে ধান-চাল বেচতে আগ্রহী নন কুলাউড়ার কৃষকরা

আজিজুল ইসলাম, মৌলভীবাজার: কুলাউড়া উপজেলায় বোরো ধান-চাল সংগ্রহের সরকারি অভিযানে কৃষকদের কাছ থেকে তেমন সাড়া মেলেনি। এ অভিযানের শুরুর দেড় মাসে শুধুমাত্র ৭০ মেট্রিক টন চাল কেনা হয়েছে। এ সময়ে কোনও ধান সংগৃহীত হয়নি।

চলতি বোরো মৌসুমে কুলাউড়া উপজেলায় সরকারি ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয় ১২৭ মেট্রিক টন ধান এবং ৯৩ মেট্রিক টন চাল। সরকারি খাদ্য গুদামের একটি সূত্র জানায়, গত ১ মে থেকে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। এটা ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। চলবে কিন্তু ২২ জুন পর্যন্ত শুধুমাত্র ৭০ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। কোনও ধান সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।

হাকালুকি হাওরতীরের এ উপজেলার শতকরা ৬০ ভাগ মানুষ বোরো ধানের ওপর নির্ভরশীল। চলতি ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানে ধান প্রতিকেজি ২২ টাকা এবং সিদ্ধ চাল প্রতিকেজি ৩২ টাকা হিসেবে ক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা হয়। অথচ বোরো মৌসুমে চাষিরা মাঠে কাঁচা ধান প্রতিমণ ৫০০ টাকায় (প্রতি কেজি প্রায় ১২ টাকা) বিক্রি করেন। অনেক কম দামে ধান বিক্রি করলেও সরকারের কাছে ধান বিক্রিতে আগ্রহ নেই চাষিদের।

এর কারণ সম্পর্কে কৃষকরা জানান, সরকারি নীতিমালা অনুসরণ করে ধান বিক্রি করা অনেক কঠিন। এত ঝামেলায় যেতে চান না কৃষকরা। প্রান্তিক কৃষকদের অভিযোগ, নির্দিষ্ট ২-৩ জন কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা হয়। অনেকবার ধান বিক্রি করতে এসে নানা অজুহাতে তাদের ধান বিক্রি না করেই ফেরত আসতে হয়েছে। এতে উল্টো কৃষকদের পরিবহন খরচ হয়েছে। এখন আর চাষিরা সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে আগ্রহী নন।

সরকারের কাছে নিয়মিত দান বিক্রেতা ভুকশিমইল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন আহমদ বাদশাহ জানান, নিজের ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে এবার ধান বিক্রি করতে পারেননি। তবে এখনও সময় আছে। তিনি চেষ্টা করবেন ধান বিক্রির।

এ বিষয়ে কুলাউড়া উপজেলার খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন জানান, বৈধ কৃষক ও মিলারের কাছ থেকে ধান-চাল সংগ্রহ করার কথা। কিন্তু কৃষকরা ধান বিক্রিতে সরকারি নীতিমালা অনুসরণ করে ধান দিতে না পারার কারণে সরকারি টার্গেট পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

হাকালুকি হাওরে লক্ষাধিক মিটার কারেন্ট জাল ও ১৪টি বেড়জাল জব্দ

দেশের বৃহত্তম হাওর হাকালুকিতে অবৈধ জাল দিয়ে মাছ শিকারের বিরুদ্ধে হাওরতীরের তিন উপজেলা প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ ও বিজিবি যৌথ অভিযান চালিয়েছে। মঙ্গলবার পরিচালিত এ অভিযানে লক্ষাধিক মিটার কারেন্ট জাল এবং ১৪টি বেড়জাল জব্দ করা হয়।

কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সুলতান মাহমুদ জানান, সকাল থেকে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, জুড়ীর ইউএনও মো. শহিদুল ইসলাম ও বড়লেখার ইউএনও সৈয়দ আমিনুর রহমানের নেতৃত্বে হাকালুকি হাওরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। আদালতে তিন ইউএনও, মৎস্য কর্মকর্তা, বেসরকারি সংস্থা ক্রেল এবং বিজিবির সদস্যরা অংশ নেন।

অভিযানকালে কুলাউড়া উপজেলা অংশে ১২টি বেড়জাল এবং ৭০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল, জুড়ী উপজেলা অংশ থেকে দুটি বেড়জাল এবং ১০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল এবং বড়লেখা উপজেলা অংশ থেকে আরও ২০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল আটক করা হয়।