স্বপন কুমার কুন্ডু, ঈশ্বরদী (পাবনা): দলিল লেখকদের ধর্মঘটের কারণে প্রায় দেড় মাস ঈশ্বরদীতে জমি-জমা নিবন্ধন বন্ধ রয়েছে। এতে সরকারের প্রায় ১০ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত ৭ মে হতে এখানে দলিল লেখকদের কর্মবিরতি শুরু হযেছে। এতে জমি নিবন্ধন করতে আসা মানুষেরা সমস্যায় পড়েছে।
অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত নতুন সাব-রেজিষ্টার নাজমুল হাসান কার্যদিবসের প্রথম দিন বুধবার দলিল লেখকদের তোপের মুখে পড়েন।এসময় ঈশ্বরদী জমি নিবন্ধন অফিসে নতুন চার দলিল লেখকের লাইসেন্স প্রদানের আদেশ বাতিল ও স্থায়ী সাব-রেজিস্টার নিয়োগের দাবিতে দলিল লেখকরা তাকে অফিসে প্রবেশ করতে না দিয়ে অফিসের বারান্দার নিচে ঘেরাও করে রাখে।
দলিল লেখকরা সাব-রেজিস্টারের কাছে আইজিআর নির্দেশিত ঈশ্বরদীর নতুন চারটি লাইসেন্স প্রদানের আদেশ বাতিল ও স্থায়ী সাব-রেজিস্টার নিয়োগসহ বিভিন্ন দাবি জানান।
দলিল লেখকরা বলেন, এই অফিসে ২৩ জনের স্থলে ৫১ জন কর্মরত আছে। তদুপরি নতুন করে চারজনকে নিয়োগদান তাদের আর্থিক কষ্ট বাড়াবে। যতদিন পর্যন্ত এই সমস্যার সমাধান না হবে ততদিন পর্যন্ত আন্দোলন চলবে এবং এখানে কোন দলিল নিবন্ধন হবে না।
অফিসে ঢুকতে না পেরে সাব-রেজিস্টার সেখান থেকে ইউএনও এর কার্যালয়ে যান। এসময় উপজেলা চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান মিন্টু, ভাইস চেয়ারম্যান মাহজেবীন শিরীণ পিয়া ও ইউএনও রফিকুল ইসলাম সেলিম দলিল লেখকদের সাথে বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে নাজমুল হাসান দুপুর দেড়টার দিকে অফিসে প্রবেশ করেন। এসময় দলিল লেখকরা কোন জমির দলিল নিবন্ধন করা যাবে না বলে তাকে জানিয়ে দেন। বিকেল পর্যন্ত অফিস করলেও তিনি কোন জমি নিবন্ধন করতে পারেননি।
নাজমুল হাসান জানান, তিনি জেলা রেজিস্টারের ৯৪২(৬) নং স্মারকের টেলিফোানিক নির্দেশে সপ্তাহে একদিন অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে এসেছেন।
ইউএনও রফিকুল ইসলাম জানান, আগামী সপ্তাহ থেকে নিয়মিত দলিল নিবন্ধন হতে পারে। তিনি আরো বলেন, জেলার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই উপজেলায় ছয় বছর ধরে নিয়মিত সাব-রেজিস্টার নেই। বিগত সময়গুলোতে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে সপ্তাহে ১/২ দিন জমি নিবন্ধন হয়েছে। এই অফিস হতে জেলার সর্বাধিক পরিমাণ রাজস্ব আয় হলেও এখানে নিয়মিত সাব রেজিষ্টার নিয়োগ দেয়া হচ্ছেনা।
নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত দলিল লেখকরা জানান, ঈশ্বরদীতে দলিল লেখক সমিতির সদস্যদের মাধ্যমে জমি নিবন্ধন করা হয়। সমিতি ছাড়া আর কেউ এখানে জমি নিবন্ধন করতে পারে না। জমি নিবন্ধন খাতে সরকারের নির্ধারিত বিভিন্ন ফি এর অর্থ ছাড়াও ক্রেতাকে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয় বলে তারা অভিযোগ করেন।