প্রতিনিধি, খুলনা: দৈনিক জন্মভূমি পত্রিকার সম্পাদক ও খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি হুমায়ুন কবীর বালুর ১১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শোক র্যালি, সমাবেশ, আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল, সাংবাদিক স্মৃতিস্তম্ভে পূস্পমাল্য অর্পণ, প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
শনিবার এসব কর্মসূচি থেকে খুনিসহ নেপথ্যের অর্থযোগানদাতা ও পরিকল্পনাকারীদের চিহ্নিত করা এবং বিচারের আওতায় আনার দাবি তোলা হয়।
হুমায়ুন কবীর বালুর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার সকালে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
২০০৪ সালের ২৭ জুন দৈনিক জন্মভূমি কার্যালয়ের সামনে সন্ত্রাসীদের বোমা হামলায় নিহত হন হুমায়ুন কবীর বালু।
বালুর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে খুলনা ওয়ার্কিং জার্নালিস্ট ইউনিটির উদ্যোগে সকাল ১০টায় প্রেসক্লাব চত্বর থেকে শোক র্যালি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে সাংবাদিক স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পমাল্য অর্পণ করা হয়। এখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তৃতা করেন খুলনা ওয়ার্কিং জার্নালিস্ট ইউনিটির আহ্বায়ক গৌরাঙ্গ নন্দী।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে খুলনার সাংবাদিকরা কর্মসূচিতে অংশ নেন। কর্মসূচিতে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বালু হত্যা মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী নিযুক্ত হওয়া আশরাফুল ইসলাম বাচ্চু ও বালু সম্পর্কে কটূক্তিকারী এরশাদ আলীকে অবিলম্বে প্রেসক্লাব থেকে বহিষ্কার, বালুর হাতে গড়া প্রেসক্লাবের নতুন ভবনের ভিআইপি লাউঞ্জের নাম বালু স্মৃতি মিলনায়তন করার দাবি জানান।
সমাবেশ থেকে খুলনা প্রেসক্লাবের বালু স্মৃতি মিলনায়তনে (ভিআইপি লাউঞ্জ) রোববারের আলোচনা সভা সফল করার জন্য আহ্বান জানানো হয়।
বোমা হামলায় নিহত হওয়ার পর খুলনা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মারুফ আহমেদ বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনের পৃথক ধারায় দুটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে পুলিশ চার্জশিট দেয়। প্রায় চার বছর ধরে বিচার চলার পর ২০০৮ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে মামলার সাত আসামি বেকসুর খালাস পান।
এই ঘটনায় দায়ের করা বিস্ফোরক মামলার অধিকতর তদন্ত গত ছয় বছরেও শেষ হয়নি। ২০০৯ সালের ২০ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবু জাফরের আবেদনের পর বিস্ফোরক মামলাটি ওই বছরের ১০ মে অধিকতর তদন্তের জন্য পাঠানো হয়। বর্তমানে মামলার এ অংশটি সিআইডিতে তদন্তাধীন রয়েছে।
সিআইডির তদন্তকারী কর্মকর্তা এএসপি শাহাদাৎ হোসেন বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। প্রকৃত রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা চলছে। অগ্রগতি হলেই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হবে।
সাংবাদিক বালুর ভাই এস এম জাহিদ হোসেন বলেন, বালু হত্যা মামলার পুনঃতদন্ত প্রয়োজন। এ জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তিনি বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বালু হত্যাকাণ্ডের সময় বিরোধী দলের নেতা ছিলেন। তিনি খুলনায় এসে বালু হত্যার সুষ্ঠু বিচারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। জাহিদ হোসেন আরও বলেন, তদন্তের মাধ্যমে বালুর খুনিসহ অর্থযোগানদাতা, পরিকল্পনাকারীসহ নেপথ্যের গডফাদারদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে এই হত্যা মামলাটির বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানান তিনি।