মিলন কর্মকার রাজু, কলাপাড়া (পটুয়াখালী): কলাপাড়ার আন্ধারমানিক নদীর সোনাতলা মোহনায় জেলেদের বড়শিতে আটকে মারা পড়েছে তিন মণ ওজনের একটি ডলফিন। শনিবার সন্ধ্যায় এক জেলের বড়শিতে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ডলফিনটি গেঁথে যায়।
আটকা পড়ার পর কয়েক ঘন্টা চেষ্টার পর ডিঙি নৌকায় তোলার আগেই ডলফিনটি মারা যায়। জেলেরা ভয়ে ওই রাতেই ডলফিনটি নদীতে ফেলে দেয় বলে স্থানীয়রা জানান।
তেগাছিয়া গ্রামের রাসেল মিয়া জানান, তেগাছিয়া বাজারের খেয়াঘাটে ডিঙি নৌকায় করে ডলফিনটি নিয়ে আসা হলে কয়েক শ’ মানুষ ডলফিনটি দেখতে ভীড় করে। ডলফিনটির পেটে বাচ্চা ছিল বলে তারা ধারণা করছেন। কারণ ডলফিনের পেট অনেক স্ফীত ছিল। ডলফিনটি লম্বায় প্রায় চার ফুট এবং ওজন প্রায় তিন মণ।
স্থানীয় একাধিক জেলে জানান, ডলফিনটি বিক্রির জন্য কলাপাড়ার আলীপুর, কুয়াকাটা, মহীপুর ও ঢোশ এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা সেটি কিনতে রাজি হয়নি। তাই ডলফিনটি ফেলে দেওয়া হয়েছে। তারা বলেছে, শিশুমাছ (ডলফিন) বাংলাদেশের মানুষ খায় না। তবে শুঁটকি করে রফতানি করা হয়।
মিঠাগঞ্জ ইউনিয়ন জেলে সমিতির সভাপতি হানিফ সওদাগর জানান, এই ডলফিন সাগরে দেখা যায়। তবে বাচ্চা প্রসবের জন্য কিংবা খাবার খুঁজতে স্রোতের টানে ডলফিনটি নদীতে চলে আসতে পারে।
প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক মানুষ জানান, ডলফিন ধরা অপরাধ এবং ডলফিন মাছ এখানে বিক্রি হয় না এমন কথা জানার পর ওই জেলে অনিচ্ছাকৃতভাবে ধরা ডলফিনটি নদীতে ফেলে দেন।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম জানান, না দেখে ডলফিনটির প্রজাতি সম্পর্কে বলা সম্ভব নয়। তবে এই নদীতে ডলফিন ধরা পড়েছে এটা খুশির খবর। তিনি বলেন, ২০/২৫ বছর আগেও আন্ধারমানিক, সোনাতলা, টিয়াখালী, রাবনাবাদ ও আগুনমুখা নদীতে প্রচুর ডলফিন দেখা যেত। কিন্তু এখন আর সাগর ছাড়া ডলফিন দেখা যায় না। তার ধারণা, পানি টানা বৃষ্টিতে পানি বেড়ে যাওয়ায় এই নদীতে আরও ডলফিন আসতে পারে। ডলফিন শিকার না করার জন্য তিনি সবাইকে অনুরোধ করেন।