প্রতিনিধি,খুলনা: বটিয়াঘাটা উপজেলার তেঁতুলতলা শান্তিনগর এলাকার রাঙ্গেমারি মৌজার একটি ঘের থেকে মাছ ডাকাতির সময় বৃহস্পতিবার ভোর রাতে সাত ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় মাছ ধরার জাল ও নৌকাসহ অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
ডাকাতদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের সহযোগীরা ঘেরের পাহারাদারের ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। অল্পের জন্য পাহারাদারের স্ত্রী ও তিন শিশু সন্তানসহ পরিবারের সদস্যরা রক্ষা পান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সংঘবদ্ধ ডাকাতদল বৃহস্পতিবার রাতে রাঙ্গেমারি মৌজায় অবস্থিত ব্যবসায়ী মো. মাসুদুর রহমানের মৎস্য ঘেরে মাছ ডাকাতি শুরু করে। খবর পেয়ে বটিয়াঘাটা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যু জামাল বয়াতীসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার এবং জাল-নৌকাসহ অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করে। গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হচ্ছে আরিফ, আহাদুজ্জামান, সুমন, বিপ্লব, সুরুজ ও মুরসালিন।
গ্রেপ্তারের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ডাকাতদের সহযোগীরা রাতেই ঘেরের পাহারাদার আব্দুস সাত্তার খাঁর ঘরে অগ্নিসংযোগ করে। এ বাড়ির লোকজনের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে সাত্তারের স্ত্রী শাফিয়া বেগম এবং তাদের তিন শিশু সন্তান রাজু (৮), রাকিব (৫) ও সাকিব (৬ মাস) সহ পরিবারের সদস্যদের আগুন থেকে রক্ষা করে।
শাফিয়া বেগম অভিযোগ করেন, সেহরি খেতে ওঠার প্রস্তুতিকালে হঠাৎ তিনি আগুনে পোড়ার শব্দ এবং ধোঁয়া দেখতে পান। এ সময় তিনি চিৎকার দিলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে প্রতিবেশীরা আগুন নিভিয়ে ফেলে। দুর্বৃত্তরা তাদের আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করে বলে করেন তিনি।
প্রতিবেশী এক নারী জানান, গ্রেপ্তারকৃত ডাকাত ও ভূমিদস্যু এবং তাদের সহযোগী সোহাগ, ইমরান ও শামীমসহ অন্যদের উত্যক্তের কারণে মেয়েরা স্কুল-কলেজে যেতে পারে না। প্রতিবাদ করার সাহস না পেয়ে মেয়েরা বাড়িতে বসে কান্নাকাটি করে। পুলিশ ও র্যাবের কাছে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ করা হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বটিয়াঘাটা থানা অফিসার ইনচার্জ মনিরুজ্জামান মোল্লা ডাকাতদের গ্রেপ্তারের সত্যতা স্বীকার করলেও রহস্যজনক কারণে ঘটনার ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে অস্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে খুলনার পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোনও অপরাধীকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
জানা গেছে, জামাল বয়াতী ভূমি জালিয়াতির অভিযোগে দুদকের দায়েরকৃত মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। তার বিরুদ্ধে হত্যা ও ভূমি দখলসহ একাধিক মামলা রয়েছে।