বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাটে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। পণ্যের গুণগতমান যথাযথ না হওয়া এবং খোলা বাজারের তুলনায় দাম বেশি হওয়ায় টিসিবি পণ্যের ক্রেতা নেই। জেলার অধিকাংশ ডিলার চলতি রমজান মাসেও পণ্য উত্তোলন করেননি। লোকসানের কারণে একের পর এক ডিলাররা তাদের ডিলারশিপ প্রত্যাহার করছেন।
টিসিবি’র ডিলারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বাগেরহাটে প্রায় ৪০ জনের মত টিসিবি ডিলার থাকলেও তাদের অনেকেই ইতিমধ্যে ডিলারশিপ প্রত্যাহার করেছেন। আবার অনেকে মাল উত্তোলন করেননি। যারা পণ্য উত্তোলন করেছেন, তারা বিপাকে পড়েছেন। বাগেরহাট বাজারের ব্যবসায়ী ও টিসিবি ডিলাররা জানান, খোলা বাজারে উন্নতমানের পাঁচ লিটারের সোয়াবিন তেল ৪৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ টিসিবিতে সমপরিমান তেলের মূল্য ৪৮০ টাকা। চিনি, ছোলা, বুটসহ অনান্য পণ্যের দামও প্রায় অনুরূপ। তাছাড়া পণ্যের গুণগত মানও খারাপ। ফলে টিসিবি পণ্যের কোনও ক্রেতা নেই।
রায়েন্দা বাজারের ৪ জন ডিলারের মধ্যে ২ জন ডিলার কিছু পণ্য উত্তোলন করলেও ক্রেতা না থাকায় তারা বিপাকে পড়েছেন। এ বাজারের ব্যবসায়ী ও ডিলার মেসার্স হাওলাদার স্টোরের মালিক মো. মোস্তফা কামাল এবং রায়েন্দা এন্টার প্রাইজের মালিক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে ১৫ রমজান অতিবাহিত হলেও (টিসিবির) মালামাল- তেল, চিনি ও ছোলাবুট মোটেও বিক্রি করতে পারেননি। পণ্যের মান নি¤œ ও বাজারের তুলনায় দাম বেশি হওয়ায় কেউ ক্রয় করতে আগ্রহী নন। যার কারণে হাজার হাজার টাকার মাল তুলে বিপাকে পড়েছেন তারা। সম্পূর্ণ পণ্যের টাকা গচ্ছা যাওয়ার আশংকা প্রকাশ করে পণ্য ফেরত অথবা ক্ষতিপূরণ দাবি করেন তিনি।
আরেক টিসিবি ডিলার জানান, নিম্নমানের মাল ও মূল্য বেশি ছাড়াও গোডাউন থেকে মাল সরবরাহের সময় বস্তায় ওজনে কম থাকে এবং অতিরিক্ত লেবার চার্জ কেটে রাখা হয়। তার ভাষায়, টিসিবি কতৃপক্ষের অদূরদর্শীতার ফলে এমন দুরাবস্থায় পড়তে হয়েছে। তাই ডিলারশিপ প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছেন।
বাগেরহাট জেলা ক্যাব এর সভাপতি বাবুল সরদার, টিসিবির পণ্যের ক্রেতা না থাকায় টিসিবি কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেন। তিনি দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে টিসিবিকে গতিশীল করার আহব্বান জানান।
টিসিবি ডিলারদের এসব অভিযোগ অনেকাংশে সত্য বলে বাগেরহাট জেলা বাজার কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান স্বীকার করেন। তিনি জানান, এসব বিষয়ে জেলা বাজার কমিটির সভায় উত্থাপন করা হবে।
এ বিষয় বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. জাহাংগীর আলম, জানান, ডিলারদের অভিযোগ লিখিতভাবে জানালে টিসিবি কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।