দিনাজপুরে আ. লীগ নেতার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা করায় হত্যার হুমকি

রতন সিং, দিনাজপুর: চিরিরবন্দরের নশরতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুলতান আলমের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করায় এক দম্পতিকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

২ জুলাই দিনাজপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মামলাটি রজু করেন ভুক্তভোগী ফাইমা বেগম। পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।

আজ বুধবার দিনাজপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ জানান ফাইমা। তিনি প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের হুইপসহ প্রশাসনের কাছে জীবনের নিরাপত্তা চেয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে ফাইমার স্বামী মজিবর রহমানসহ তাদের সন্তানেরা উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে ফাইমা বেগম অভিযোগ করেন, তার স্বামী মজিবর রহমান চিরিরবন্দর থানার রাণীরবন্দরে নাবিল পরিবহনের কমিশন এজেন্ট হিসেবে ২০-২৫ বছর ধরে কাজ করে আসছেন। কিন্তু তাকে সেখান থেকে সরানোর লক্ষ্যে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সুলতান আলম দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করে আসছেন।

ফাইমা জানান, ২৪ জুন বিকেলে সুলতান আলম নাবিল কাউন্টারে গিয়ে মজিবর রহমানের কাছে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু চাঁদা না পেয়ে সুলতান মজিবরকে দেখে নেবেন বলে হুমকি দেন।

ফাইমা আরও অভিযোগ করেন, ওই বিকেলে কেনাকাটা শেষে সঙ্গী গোলাপি বেগমসহ তিনি রাণীরবন্দর থেকে ভ্যানে চড়ে বাড়ি ফিরছিলেন। ভ্যানটি রাণীপুর গ্রামের বাহাদুর বাজারে পৌঁছালে সুলতান আলম অজ্ঞাত দুই ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে এসে তাদের পথ আগলে দাঁড়ায়। সুলতান তাকে টেনেহিঁচড়ে ভ্যান থেকে নামিয়ে তার শ্লীলতাহানি করেন বলে অভিযোগ করেন ফাইমা। এ সময় তার সঙ্গীকেও মারধর করা হয়। বাজারের দোকানদারসহ বহু লোক সেখানে জড়ো হলে সুলতান সঙ্গীদের নিয়ে মোটরসাইকেলে করে চলে যায়।

 

ফাইমা সাংবাদিকদের জানান, শ্লীলতাহানির ঘটনার পর তিনি চিরিরবন্দর থানায় মামলা দিতে গেলে পুলিশ মামলা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়। তারা তাকে কোর্টে গিয়ে মামলা করার পরামর্শ দেয়। ২ জুলাই তিনি দিনাজপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে সুলতানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

ফাইমা আরও অভিযোগ করেন, মামলার পর সুলতান মামলা তুলে না নিলে তাকে এবং তার স্বামীকে জানে মেরে ফেলার হুমকি দেন। তার সন্তানদের অপহরণ করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। সুলতান ও তার লোকজন মজিবরকে রাণীরবন্দরে পরিবহন ব্যবসা করতে দিচ্ছে না। এ নিয়ে তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এতে তাদের রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। তারা সুলতানকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান এবং সব মহলের কাছে তাদের নিরাপত্তা বিধানের অনুরোধ করেন।