বাগেরহাট প্রতিনিধি: টানা চার দিনের ভারী বর্ষণে উপকূলীয় বাগেরহাট জেলার জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বাগেরহাট, মোড়েলগঞ্জ ও মংলা পৌরসভাসহ জেলার নিম্নাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। এসব স্থানে সরকারি-বেসরকারি অফিস, রাস্তা-ঘাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্কুল-মাদ্রাসা, বাড়ি-ঘর, বীজতলা ও ফসলের ক্ষেত জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। শহরের রাস্তায়ও জমেছে হাটু পানি। শত শত পরিবারের রান্না-বান্না বন্ধ হয়ে গেছে। বসত ঘরে পানি উঠে ফ্রিজ-টিভিসহ দামি আসবাবপত্র নষ্ট হয়েছে অনেকের।
কচুয়া, মংলা, মোড়েলগঞ্জ, রামপাল, চিতলমারী ও বাগেরহাট সদর উপজেলার দুই শতাধিক পুকুর ও মাছের ঘের ভেসে গেছে। এতে অন্তত ৩০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে চাষিদের সূত্রে জানা গেছে। কমপক্ষে ৫০ টি গ্রামে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশুও চরম কষ্টের মধ্যে পড়েছে। এসব এলাকায় পানীয়-জলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
স্লুইজ গেটগুলো দিয়ে ঠিকমত পানি ওঠা-নামা না করা, সরকারি খালগুলো ভরাট ও দখল হওয়া এবং পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পানি সরতে পরছে না। ফলে মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়ছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন। এদিকে, বলেশ্বর, পানগুছি, চিত্রা, ভৈরব, মধুমতি নদীর ভাঙ্গন বেড়েছে। জেলার কমপক্ষে ১২টি স্থানে বেড়িবাঁধ ও সড়কে ধস ও ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. জাহাংগীর আলম বলেন, গত চার দিনের টানা ভারী বর্ষণে জেলার ৯টি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে মাছের খামার, আমনের বীজ তলা, পানের বরাজ পানিতে তলিয়ে ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনকে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করতে বলা হয়েছে। ভাঙ্গনের মুখে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধগুলি জরুরিভাবে মেরামতের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।