রাজশাহী থেকে কাজী শাহেদ: রাজশাহীতে মৃত নারীর সিটিস্ক্যান রিপোর্ট করে তোপের মুখে টাকা ফেরত দিল মেডিপ্যাথ ডায়াগনস্টিক সেন্টার। শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। মৃত ওই রোগীর নাম সালমা বেগম (৭০)। তিনি রাজশাহীর কাটাখালীর এমায়েতপুর এলাকার বাসিন্দা।
সালমার স্বজন রোকিনা জানান, গতকাল ভোরে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন সালাম বেগম। পরে তাকে স্থানীয় এক কবিরাজের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সালমা আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে সকাল ১০টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসকরা সালমাকে পর্যবেক্ষণ শেষে সিটিস্ক্যান করার পরামর্শ দেন। ওয়ার্ড থেকে রোগীকে নিয়ে লেজার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যাওয়ার কথা বলা হয়। সেখানে গিয়ে সিটিস্ক্যান বাবদ দুই হাজার ৭০০ টাকা চাওয়ায় তিনি রোগীকে নিয়ে মেডিপ্যাথ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যান। মেডিপ্যাথে সিটিস্ক্যান মেশিন না থাকলেও তার কাছ থেকে দুই হাজার ৪০০ টাকা আদায় করে রোগীকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাদেরই মালিকানাধীন তাসিন হাসপাতালে।
রেকিনা আরও জানান, সালমাকে সিটিস্ক্যানের জন্য ট্রলিতে নেওয়া মাত্র একটি ঝাঁকুনি দিয়ে উঠেন তিনি। এরকম দেখে তিনি ট্রলিম্যানকে বলেন, সালমা আর বেঁচে নেই। তবুও ট্রলিম্যান তাকে সিটিস্ক্যান রুমে নিয়ে গিয়ে কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে আসেন। তাসিন হাসপাতাল থেকে মৃত সালমাকে মেডিপ্যাথে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ম্যানেজার মোখলেসুর রহমানকে তিনি বলেন, সালমা মারা যাওয়ার পরও তার সিটিস্ক্যান করা হয়েছে। তখন তিনি তাকে ধমক দিয়ে বলেন, ‘আপনার রোগী বেঁচে আছে, দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।’ এরপর তিনি ভেতরে চলে যান। সেখান থেকে ফিরে মৃত সালমাকে নিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেটে বসে থাকেন। পরে পুলিশ এসে ঘটনা শুনে মেডিপ্যাথ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার মোখলেসুর রহমানকে রোগীর টাকা ফেতর দিতে বলেন। পরে ম্যানেজার টাকা ফেরত দেন।
মেডিপ্যাথ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার আনোয়ারুল আখতার স্বপন জানান, মেডিপ্যাথে আসা সিটিস্ক্যানের রোগীগুলো তাদের মালিকানাধীন তাসিন হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই সিটিস্ক্যান করানো হয়। সালমা বেগমের ক্ষেত্রেও তাই করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, সালমা বেগমের যখন সিটিস্ক্যান করা হয় তখন তিনি জীবিত ছিলেন। সিটিস্ক্যান শেষে যখন তিনি মেডিপ্যাথে ফেরেন তখন তিনি জীবিত ছিলেন।