রাজশাহী থেকে কাজী শাহেদ: রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে এক কারারক্ষীকে মারধরের ঘটনায় সিনিয়র জেল সুপার শফিকুল ইসলাম খানসহ চারজনের নামে রাজশাহীর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিচারক খালিদ হোসেন ২৮ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানীর দিন ধার্য করেছেন। ওইদিন মামলার সাক্ষীদের জবানবন্দী গ্রহণ করবেন বিচারক। মামলার অন্য আসামিরা হলেন জেলার শাহাদত হোসেন, সুবেদার আবদুল মালেক ও সংস্থাপন অফিসের কারারক্ষী আনন্দ।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১৫ জুন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগরের কারারক্ষী মির্জা হিরা (১৩০৪৪) জরুরি প্রয়োজনে ডেপুটি জেলার হোসেনুজ্জামানের কাছে ছুটি চেয়ে না পেয়ে তিনি ছুটির আবেদন জমা দিয়ে বাড়ি চলে যান। ১৯ জুন বাড়ি থেকে ফিরে এসে কারাগারের সংস্থাপন শাখায় হাজির হতে গেলে সুবেদার আবদুল মালেক তাকে সিনিয়র জেল সুপার শফিকুল ইসলাম খানের কাছে নিয়ে যান। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই ছুটিতে যাওয়ার অজুহাতে সিনিয়র জেল সুপার তাকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দিয়ে রিজার্ভ অফিসে পাঠিয়ে দেন।
ওইদিনই বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সুবেদার মালেক রিজার্ভ ব্যারাকের কাছে যায়। এ সময় কারারক্ষী মির্জা হিরা তাকে মিথ্যা অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে অভিযোগ করলে সুবেদার উত্তেজিত হয়ে তাকে মারতে উদ্যত হন এবং উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। ধস্তাধস্তির খরর পেয়ে ডেপুটি জেলার হোসেনুজ্জামান, কারা সংস্থাপন অফিসে কর্মরত কারারক্ষী আনন্দ (৩১৯৭২) এবং সুবেদার আবদুল মালেক কারারক্ষী মির্জা হিরাকে বেদম মারধর করেন। ঘটনার সময় অন্য কারারক্ষীরা এগিয়ে আসলে তারা থেমে যান। ওইদিনই রাতে রোলকলে কারারক্ষী মির্জা হিরাকে অন্যায়ভাবে মারার প্রতিবাদ করলে কারা কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দেওয়ায় কারারক্ষীরা সন্তুষ্ট হয়।
পরবর্তীতে প্রতিবাদকারীদের মধ্য ৪ জনকে অন্য জেলায় বদলিসহ দুইজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে গত ৭ জুলাই কারারক্ষী মির্জা হিরা বাদী হয়ে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শফিকুল ইসলাম খান, জেলার শাহাদত হোসেন, সুবেদার আব্দুল মালেক ও কারারক্ষী আনন্দকে আসামি করে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেন। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে শুনানির দিন ধার্য করেন।
এ ব্যাপারে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শফিকুল ইসলাম খান বলেন, মামলার বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে এ সংক্রান্ত কোনো কাগজ হাতে পাননি। তিনি আরও বলেন ওই ঘটনায় কারারক্ষী মির্জা হিরার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তদন্ত কমিটিও করা হয়।