সৌদিতে নিহত মাসুদের বাড়িতে শোকের মাতম, দেনার চিন্তায় দিশেহারা

কিশোরগঞ্জ থেকে মোস্তফা কামাল: সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের মাজমা এলাকায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার বর্ষাগাতি গ্রামের গ্রাম পুলিশ ওসমানের ছেলে মাসুদ মিয়া (২৫) মারা গেছেন। তার বাড়িতে এখন চলছে শোকের মাতম। বৃহস্পতিবার রাতে দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত মাসুদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকালে মারা যান।

User comments
নিহত মাসুদ মিয়া

নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাসুদ তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড়। মাসুদ সুস্থ হলেও অন্য ভাই-বোন সবাই বাক প্রতিবন্ধী। পরিবারের অভাব-অনটনের কারণে মাসুদ অষ্টম শ্রেণির বেশি লেখাপড়া করতে পারেননি। গ্রামপুলিশ বাবার বেতনের টাকায় সংসার চলে না। সেই কারণে তিনি পৌরসদরের ঈশাখাঁ রোডের ফুটপাতে বাদাম ও মুড়ি বিক্রি করেন। ছেলেও ছোটখাট ব্যবসা করতেন। কিন্তু এতেও বেশি সুবিধা করতে না পেরে ৫ লাখ টাকায় বসতবাড়ি বিক্রি করে, আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে ধার ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে দালালের মাধ্যমে সাড়ে ৭ লাখ টাকার বিনিময়ে গত ১৮ জুন শ্রমিকের ভিসায় মাসুদকে সৌদি আরবে পাঠানো হয়। আশা ছিল সংসারে সুদিন আসবে, সবার মুখে হাসি ফুটবে। ছেলের রোজগারের টাকায় আবার বাড়ি হবে। কিন্তু মাত্র ২২ দিনের মাথায় সব শেষ হয়ে গেল। কারো শান্তনাই যেন পরিবারের বাঁধ ভাঙা কান্না থামাতে পারছে না।

ছেলে তো গেলই, বাড়ি আর ধারদেনার কি হবে, সেই চিন্তায়ও গোটা পরিবার এখন দিশেহারা। চোখে যেন গাঢ় অন্ধকার। মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়লো দরিদ্র এ পরিবারের। মাসুদের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে অসহায় পরিবার সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে।