অবৈধ বাঁধের কারণে বাগেরহাটের কাড়াপাড়ায় ১২ গ্রাম জলমগ্ন

বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাটে স্লুইজ গেট আটকে সরকারি খাল জবরদখল করে পাটা ও বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় বৃষ্টির পানি জমে গ্রামের পর গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এসব গ্রামের অধিকাংশ মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। তাদের ঘরে পানি উঠে রান্না খাওয়া পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গেছে। বীজতলা ও সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। প্রভাবশালী কতিপয় ব্যক্তি স্লুইজ গেট আটকে সরকারি খালে বাঁধ ও পাটা দিয়ে মাছ চাষ  করলেও এলাকাবাসী সাধারণ মানুষ টু শব্দ করতে পারছে না। এ সব এলাকায় তীব্র জলাবদ্ধতা, ফসলহানী ও পরিবেশের মারত্মক বিপর্যয়ে জনমনে তীব্রক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে।

Bagerhat Photo-1 (11-07-15)
অবৈধ বাঁধের কারণে পানি নামতে না পারায় বাড়ি-ঘর জলমগ্ন হয়ে পড়েছে

শনিবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে বাগেরহাট সদরের কাড়াপাড়া ইউনিয়নের দেয়লবাড়ি, সিংড়াই, কাঠাল, কাঠি, পাটরপাড়া, রাধাবল্লভ, কাঠুয়া, গোমতি, গোবরদিয়া, ফুলতলা, বাদে-কাড়াপাড়াসহ ১২/১৪ টি গ্রামের অধিকাংশ রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, ফসলের ক্ষেত  পানিতে তলিয়ে আছে। ঘরে পানি উঠে যাওয়ায় এসব গ্রামের অধিকাংশ লোক রান্নাবান্না করতে পারছে না।

স্থানীয় ইউপি মেম্বার শেখ ইউনুস আলী ও জাহিদুর রহমানসহ এলাকাবাসী বাবুল শেখ, কার্ত্তিক চন্দ্র, আনোয়ার হোসেন, আমিনুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, সরকারি কাটাখাল, গজালিয়া খাল, জিপতলা খাল ও দেলভাসানী খাল অবৈধভাবে দখল করে স্লুইজগেট আটকে দিয়ে মাছ চাষ করায় পানি নামতে পারছে না। ফলে নজিরবিহীন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। তাঁদের ভাষায়, “রান্না খাওয়া করতে পারছিনা, সব শেষ হয়ে যাচ্ছে।”

নামপ্রকাশ না করার শর্তে এলাকাবাসী জানান, ক্ষমতাসীন দলের নামে প্রভাবশালী কতিপয় ব্যক্তি সরকারি খালে ডবল ডবল পাটা বসিয়ে নেট জাল দিয়ে স্লুইজগেট আটকে মাছ চাষ করায় এমন দুর্ভোগের সৃষ্টি হচ্ছে।

এ ব্যাপারে বাগেরহাট সদর আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্জ্ব এ্যাড: মীর শওকাত আলী বাদশা জানান, যতবড় ক্ষমতাশালী ব্যক্তি হোক না কেন সরকারি খাল ও স্লুইজগেটমুক্ত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, রবিবার এলাকায় ফিরে সরেজমিনে তিনি এসব অবৈধ বাঁধ ও পাটা তুলতে কাজ করবেন।’ জেলা প্রশাসক মো: জাহাংগীর আলম জানন, ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে সরকারি খালের অবৈধ বাঁধ ও পাটা অপসারণে অভিযান শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক এলাকার পানি নেমে গেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।