কোটালীপাড়ায় খাল হয়ে গেল নদী, খননের ফলে লোকালয়ে ভাঙন

হায়দার হোসেন, গোপালগঞ্জ: কোটালীপাড়া উপজেলায় খালকে নদী দেখিয়ে চলছে খনন কাজ। আর এ খননের ফলে খালের দুই পাড়ের শতাধিক বসতবাড়ি ভাঙনের কবলে পড়েছে। অবিলম্বে খনন কাজ বন্ধের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।

জানা গেছে, সম্প্রতি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বাস্তবায়নাধীন ‘মাদারীপুর-চরমুগুরিয়া-টেকেরহাট-গোপালগঞ্জ নৌপথ খনন (দ্বিতীয় সংশোধিত)’ প্রকল্পের আওতায় নদীর নাব্যতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মোস্তফাপুর হতে পয়সারহাট পর্যন্ত ড্রেজিংয়ের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়। টেন্ডারে মোস্তফাপুর হতে পয়সারহাট পর্যন্ত খালকে খননের জন্য দুটি অংশে ভাগ করা হয়। এর একটি অংশ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার পয়সারহাট হতে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার পীড়ারবাড়ী। অপর অংশটি কোটালীপাড়ার পীরারবাড়ী হতে মাদারীপুর জেলার মোস্তফাপুর পর্যন্ত।

টেন্ডারে অংশ নিয়ে কোটালীপাড়ার পীরারবাড়ী হতে আগৈলঝাড়ার পয়সারহাট পর্যন্ত খননের জন্য কাজ পায় এ্যাকোয়া মেরিন ড্রেজিং নামের একটি প্রতিষ্ঠান।

মঙ্গলবার সরেজমিন রামশীল ও মুশরিয়ায় দুটি ড্রেজিং মেশিন বসিয়ে খাল খনন করতে দেখা যায়। এই ড্রেজিং এর ফলে রামশীল ও মুশরিয়া গ্রামের শতাধিক বসতবাড়ি ভাঙনের কবলে পড়েছে।

kotalipara canal bank erosion
খননের ফলে খালের পাড়ের লোকালয় ভেঙে যাচ্ছে।

মুশরিয়া গ্রামের কৃষক আন্দ্রিয় বাড়ৈ (৮০) বলেন, এই খননের ফলে আমার প্রায় দুই বিঘা আয়তনের একটি পুকুর ভাঙনের কবলে পড়েছে। ইতোমধ্যে পুকুরের পশ্চিম পাড় ভেঙে খালের সঙ্গে মিশে গেছে। এই পুকুরে মাছ চাষ করে আমার সংসার চলতো।

একই গ্রামের লক্ষণ মিস্ত্রির বাড়িও ভাঙনের কবলে পড়েছে। তিনি বলেন, অবিলম্বে এই খনন কাজ বন্ধ করা না হলে আমাদের এলাকার শতাধিক পরিবারের বাড়িঘর বিলীন হয়ে যাবে।

রামশীল গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য সুভাষ হালদার বলেন, আমাদের গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ওয়াপদার খালকে কুমার নদী দেখিয়ে খনন কাজ করা হচ্ছে। আমাদের এই খাল খননের কোনো প্রয়োজন নেই।

পীরারবাড়ী-পয়সারহাট ওয়াপদার খালটি নদী না খাল, জানতে চাওয়া হলে বিআইডব্লিউটিএর উপ-সহকারী প্রকৌশলী এরশাদ জানান, এটি নদী না খাল তা আমার জানা নেই। তবে আমাদের সার্ভেয়াররা এটিকে কুমার নদী দেখিয়েছে।

এ্যাকোয়া মেরিন ড্রেজিং কোম্পানির সাইট ইঞ্জিনিয়ার সাইফুল ইসলাম বলেন, খননের ফলে নদীর দুই পাড়ের কিছু কিছু জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।

রামশীল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খোকনচন্দ্র বালা বলেন, এই খননের ফলে এলাকার অনেক লোকজনের বসতবাড়ি ভেঙে যাচ্ছে বলে আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। এলাকাবাসীর দাবি এই খননে তাদের উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হবে। তাই আমি খনন কাজ বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।