জয়নাল আবেদীন, রংপুর: মোবাইল ফোনে এক নারীর সঙ্গে কথা বলার অভিযোগ এনে বদরগঞ্জে ঈদের দিন সারা রাত মোরছালিন নামে এক যুবককে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন চালানো হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের প্রতিবাদের মুখে ওই যুবককে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে নির্যাতনকারীরা।
জানা গেছে, উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের অরুন্নেছাহাট গ্রামের কাফি মিয়ার মেয়ে দুই সন্তানের মা মঞ্জুয়ারা খাতুন আরফিনা স্বামী-সন্তানসহ ঢাকায় থাকেন। একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন তিনি। একই ইউনিয়নের কোস্তর মন্ডলের ছেলে এক সন্তানের বাবা মোরছালিনও তার পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকেন।

দুই পরিবারই ঈদে গ্রামের বাড়িতে আসে। ঈদের দিন রাতে আরফিনা তার মোবাইল ফোনে মোরছালিনকে তাদের বাড়িতে ডেকে নেন। দাওয়াত পেয়ে মোরছালিন তার বাড়িতে আসে। এরপর মেয়ের বাবা, মা ও গ্রামের কিছু লোকজন আরফিনাদের বাড়ির আঙ্গিনায় গরুবাঁধা রশি দিয়ে মোরছালিনকে বেঁধে রাতভর নির্যাতন চালায়। এতে রক্তাক্ত হয় মোরছালিন।
সারারাত মারধর করার পর রোববার বিকেল পর্যন্ত তাকে গাছের সাথে রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। এক পর্যায়ে সেখানে আসেন গ্রাম পুলিশ আবদুস ছালাম। তিনি বলেন, আমি খবর পেয়ে মেয়ের বাড়িতে গিয়ে দেখি ছেলেটিকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে। আমি তাদেরকে থামিয়ে দেই এবং বলি তোমরা কাজটা ঠিক করো নাই।
ইউপি সদস্য সাহেব আলী জানান, মেয়ে পক্ষ ছেলেটিকে থানায় পুলিশের হাতে হস্তান্তর না করে তাদের বাড়িতে গাছের সঙ্গে সারা রাত বেঁধে রেখে নির্যাতন চালায়। এটা মোটেও ঠিক হয়নি। এ ব্যাপারে আরফিনা বলেন, সে ঢাকায় প্রায় আমাকে মোবাইল ফোনে বিরক্ত করতো। এ জন্য তাকে উচিত শিক্ষা দিয়েছি। যাতে সে আর আমাকে ফোন করার সাহস না পায়।
এদিকে গাছে বাঁধা অবস্থায় মোরছালিন উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, আমি কখনোই তাকে মোবাইল ফোনে বিরক্ত করতাম না। উল্টো তিনি আমাকে ফোন করে সম্পর্ক করার প্রস্তাব দিতেন।। কিন্তু আমি তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সুকৌশলে আমাকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করেন।
এদিকে এ ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠলে মেয়ে পক্ষ পরিস্থিতি সামাল দিতে ওই যুবকের নামে বদরগঞ্জ থানায় একটি ধর্ষণ চেষ্টার মামলা করে। মামলার সূত্র ধরে যুবককে মেয়ের বাড়ি থেকে গাছের সাথে বাঁধা অবস্থায় পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
বদরগঞ্জ থানার ওসি মোস্তাফিজার রহমান বলেন, বিষয়টি আমরা জানি এবং তাকে মেয়ের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করি।