আতাউর রহমান মিন্টু, গফরগাঁও (ময়মনসিংহ): গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও উপকেন্দ্রগুলোতে কর্মরত অধিকাংশ চিকিৎসক ঈদের ছুটি শেষে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত হাসপাতালে যোগ না দেয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে সহস্রাধিক রোগী। চিকিৎসা না পেয়ে অনেক হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন।
জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ জন, চারটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চারজন ও ১১টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে আটজনসহ উপজেলায় মোট ৩২ জন চিকিৎসক কর্মরত। তাদের মধ্যে বৃহস্পতিবার সাতজন চিকিৎসক কর্মস্থলে উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপস্থিত ছিলেন পাঁচজন।
তদারকি না থাকায় এবং পরিচ্ছন্ন কর্মীর অনুপস্থিতিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও উপকেন্দ্রগুলোত পুঁতিগন্ধময় হয়ে পড়েছে।
সরেজিমিন দেখা যায়, এ হাসপাতালে প্রায় সকল ডাক্তার কর্মস্থলে না থেকে রাজধানী ঢাকা ও জেলা শহর ময়মনসিংহে অবস্থান করে চাকুরি করে থাকেন। ‘ট্রেনে ভীড়’ এই অজুহাতে তারা ঈদের বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই কর্মস্থলে আসা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। ঈদের ছুটি পাঁচ দিন আগে শেষ হলেও গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত যোগ দেননি অধিকাংশ চিকিৎসক।
এ হাসপাতালের জরুরি প্রসূতি সেবা বিভাগটি চিকিৎসক ও কর্মীর অনুপস্থিতির কারণে বেশ কয়েকদিন ধরেই তালাবদ্ধ। জরুরি রোগীরা এখানে চিকিৎসা সেবা নিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন।
উপজেলার ষোলহাসিয়া গ্রামের গৃহবধূ জোনাকী (২০) ডাক্তারের অনুপস্থিতির কারণে গত বৃহস্পতিবার চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঈদের ছয়দিন পরও ডাক্তার, নার্স না আসায় চিকিৎসা নিতে পারলাম না।
এ বিভাগের কর্মরত জুনিয়র কনসালট্যান্ট (গাইনী) উন্মেল ওয়ারা খান চৌধুরী সর্বশেষ কর্মস্থলে ছিলেন গত ১৪ জুলাই। সহকারী সার্জন আফরোজা ইসলাম কর্মস্থলে না থেকে জেলা সদর ময়মনসিংহে অবস্থান করেন। তিনি সর্বশেষ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছিলেন গত ১৩ জুলাই। তিনি মোবাইল ফোনে জানান, ট্রেনের ভিড়ের কারণে তিনি আসতে পারছেন না। আগামী ২৬ জুলাই তিনি আসবেন।
কোন ছুটি ছাড়াই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র কনসালট্যান্ট (অর্থো) মো. মিজানুর রহমান গত ১০ জুলাই থেকে অনিয়মিত। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চারটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মধ্যে উপজেলার হালিমাবাদ স্বাস্থ্যকেন্দ্র ছাড়া অন্যগুলোতে ঈদের আগে পরে মিলিয়ে চিকিৎসক আসেন না অনেক দিন।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ওয়ারেজ উদ্দিন ফরাজী বলেন, অনেকেই তাদের পাওনা ছুটি কাটিয়েছেন। ট্রেনে যাতায়াতের অসুবিধায় অনেকে আসতে পারছেন না। দু-এক দিনের মধ্যেই এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
ট্রেনের নিচে পড়ে প্রতিবন্ধীর মৃত্যু
গফরগাঁওয়ে ট্রেনের নিচে পড়ে অজ্ঞাতনামা এক প্রতিবন্ধী নারীর মৃত্যু হয়েছে। তার বয়স আনুমানিক ৪৫ বছর। শুক্রবার সকালে গফরগাঁও রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে তিন কিলোমিটার উত্তরে উপজেলার সালটিয়া ইউনিয়নের রৌহা কালিরহাট নামক স্থানে ঘটনাটি ঘটে ।
এলাকাবাসী জানান, জানান গত কয়েকদিন যাবত ওই নারীকে কালিরহাট এলাকায ঘুরাফেরা করতে দেখা গেছে। কোন ট্রেনের নিচে পড়ে মৃত্য হয়েছে তা কেউ বলতে পারেনি।
গফরগাঁও রেলওয়ে স্টেশন জিআরপি পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ জানান, দুপুর পৌনে ২টার দিকে মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।