রতন সিং, দিনাজপুর: রংপুর বিভাগের আট জেলার মধ্যে দিনাজপুর মাছ চাষে এগিয়ে আছে। জেলায় বছরে ৪০ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হয়। মাছ চাষ করে গত বছর জেলার মৎস্যজীবীরা ১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা মুনাফা করেছেন। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. হাসান ফেরদৌস সরকার গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব তথ্য জানান। জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে শনিবার তার কার্যালয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়।
মৎস্য কর্মকর্তা আরো জানান, মাছ চাষে এগুলেও এ জেলায় এখনো চাহিদা অনুযায়ী মাছের ঘাটতি রয়ে গেছে। জেলায় প্রতিবছর মাছের চাহিদা ৬২ হাজার মেট্রিক টন। । অবশিষ্ট ২২ হাজার মেট্রিক টন মাছ অন্য জেলা থেকে আসে।
মৎস্য কর্মকর্তা আশা প্রকাশ করেন, জেলার ১৩টি নদী ও ৫৪ হাজার ৩০০ ছোট-বড় পুকুর এবং জলাশয়ে যুগোপযোগী পদ্ধতিতে মাছ চাষ করা হলে চাহিদা পূরণ করে অন্য জেলায় মাছ রপ্তানি করা যাবে। এজন্য সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
মৎস্য কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, জেলার ১১ ভাগ মানুষ মাছ চাষ ও মৎস্যজীবী হিসেবে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছেন। এর মধ্যে এক ভাগ নারী। ছয় লাখ মানুষ মাছ চাষের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। ধানের জমিতে মাছ চাষ করে অনেক চাষি আর্থিক সাফল্য পেয়েছেন। জেলায় দেশীয় প্রজাতির মাছ উৎপাদন সফলভাবে এগুচ্ছে। জেলার উন্মুক্ত জলাশয়, নদী, খাল-বিল ও জলাশয়ে দেশীয় প্রজাতির মাছ উৎপাদন চলছে। মাছের ঘাটতি পূরণে আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে জেলার মাছের চাহিদা পূরণে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
গত বছর জেলায় ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৯টি পুকুর মাছ চাষের জন্য সংস্কার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৮টি সরকারি ও একটি ব্যক্তিমালিকানার পুকুর রয়েছে। চলতি অর্থ বছরে জেলায় মাছ চাষযোগ্য পুকুর সংস্কারের পরিকল্পনা রয়েছে। জেলার ১৩টি নদী খনন করে মাছ চাষ উপযোগী করা হলে দেশি প্রজাতির মাছ চাষে অভয়ারণ্য গড়ে তোলা সম্ভব বলে জানান হাসান ফেরদৌস।
তিনি আরো জানান, আগামীতে জেলার চাহিদা পূরণ করে উৎপাদিত মাছ অন্য জেলায় রপ্তানি করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। মাছ চাষে জেলা মৎস্য অধিদপ্তর মাছের পোনা সরবরাহ ও সহযোগিতা প্রদান করায় পার্বতীপুর মৎস্য হ্যাচারির ব্যবস্থাপক মো. ইসাহাক আলীকে ২৯ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রৌপ্য পদক প্রদান করেন।