কলাপাড়ার ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি

মিলন কর্মকার রাজু, কলাপাড়া (পটুয়াখালী): কলাপাড়ার অন্তত ৪০টি গ্রামের ৬০ হাজারের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন নদীতে জোয়ারের পানি দু-তিন ফুট বেড়ে যাওয়ায় তলিয়ে গেছে অন্তত দুই হাজার বসতঘর। রাস্তাঘাট ডুবে থাকায় চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। উপজেলার লালুয়া, মহীপুর, ডালবুগঞ্জ ও পৌরশহরের ওয়াপদা সড়কের বাইরের পরিবারগুলো দুর্দশার মধ্যে পড়েছে।

kalapara inundated by tidal surge
লালুয়া এলাকায় জলমগ্ন সড়ক পেরিয়ে ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাচ্ছে শিশুরা।

লালুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মীর তারিকুজ্জামান তারা জানান, ভাঙা বাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করায় ১০টি গ্রামের অন্তত তিন হাজার কৃষক পরিবারের বাড়িঘরে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সব পানিতে ভাসছে। বাঁধের উপর রান্না করতে হচ্ছে। বহু পরিবার শুকনো খাবার খেয়ে বেঁচে আছে। জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে পুকুর-ঘেরের কোটি কোটি টাকার মাছ। বন্ধ হয়ে গেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

ডালবুগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আবদুস সালাম শিকদার বলেন, অপরিকল্পিতভাবে গাববাড়িয়া ক্লোজার করায় এক গ্রামের মধ্য দিয়ে অন্য গ্রামের পানি নামার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ রয়েছে ১৯টি স্লুইসের পানি নামার পথ। ফলে এসব গ্রামের মানুষ স্থায়ীভাবে পানিবন্দি হয়ে আছে। তাদের আমন আবাদ পড়েছে অনিশ্চয়তার মধ্যে। রোববার অস্বাভাবিক জোয়ারে কলাপাড়া-কুয়াকাটা সড়ক যোগাযোগ প্রায় পাঁচ ঘন্টা বন্ধ থাকে। ফেরির ঘাটগুলোর গ্যাংওয়ে ও বেইলি ব্রিজ চার-পাঁচ ফুট পানিতে ডুবে থাকায় এমন দশা হয়।

কুয়াকাটার একাধিক ব্যবসায়ী জানান, কুয়াকাটা সৈকতে অস্বাভাবিক জোয়ারের প্রবল ঝাপটায় শত শত গাছপালা ভেঙে গেছে। নারিকেল, ঝাউ বাগানের শত শত গাছ উপড়ে পানিতে ভাসছে। গত কয়েকদিন ধরে সৈকতে এ ভাঙন চলায় হুমকির মুখে পড়েছে মাঝিবাড়ি ও আদর্শ গ্রামের ছিন্নমূল পরিবারগুলো। সরকারিভাবে এখনও দুর্গত এলাকায় কোনো সহায়তা  না দেওয়ায় এসব পরিবার দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে।