প্রতিনিধি, বাগেরহাট: অনিয়ম ও দুর্নীতির দায়ে শরণখোলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই প্রধান শিক্ষকসহ চার শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় খুলনার উপ-পরিচালক এ কে এম গোলাম মোস্তফা স্বাক্ষরিত দুই প্রধান শিক্ষকের বরখাস্তের চিঠি সোমবার শরণখোলা শিক্ষা অফিসে পৌঁছেছে। অন্য দুই সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ জেলা শিক্ষা অফিসে এসেছে। দু-একদিনের মধ্যে তা পাওয়া যাবে বলে শরণখোলা উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে। গত ৩০ জুন থেকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের এই আদেশ কার্যকর হয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বরখাস্ত হওয়া শিক্ষকরা হলেন পূর্বখাদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলমগীর হোসেন, দক্ষিণ আমড়াগাছিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন হাওলাদার এবং ৭১ নম্বর মধ্য রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক) মো. নাসির উদ্দিন মুক্তা ও ৮১ নম্বর পশ্চিম কদমতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. মশিউর রহমান মোল্লা।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, শাহ আলম নামের একজন বাদী হয়ে শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে ওই চার শিক্ষকরে বিরুদ্ধে দুর্নীতি, বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতি, শ্রেণিকক্ষে পাঠদান না করা, অবৈধভাবে শিক্ষকদের সার্ভিস বই দখলে রাখা ও আনন্দ স্কুলে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহণ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ তদন্ত করে ইউএনও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে একটি প্রতিবেদন পাঠান। প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা অধিদপ্তর সরকারি কর্মচারী বিধি অনুযায়ী এসব শিক্ষকদের অসদাচরণ ও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করে সাময়িকভাবে বরখাস্তের আদেশ দেন।
চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, তাদেরকে বরখাস্তকালীন নিয়মিত কর্মস্থলে অবস্থান করতে হবে এবং কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তারা অন্যত্র যেতে পারবেন না। বরখাস্তকালীন তারা বিধি মোতাবেক খোরপোষ ভাতা পাবেন।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুশতাক আহমেদ জানান, ২৯ জুন ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে আদেশ জারি হয় এবং ৩০ জুন তা কর্যকর করে বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়। প্রধান শিক্ষক দুজনের বরখাস্তের চিঠি পাওয়া গেছে। সহকারী দুই শিক্ষকের চিঠি জেলা শিক্ষা অফিসে পৌঁছেছে। দু-একদিরে মধ্যে তা পাওয়া যাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অতুল মন্ডল জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর তা তদন্ত করে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি প্রতিবেদন মহাপরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বরাবরে পাঠানো হয়েছিল। সেই মোতাবেক ব্যবস্থা হয়েছে। পরবর্তীতে অন্য কোনো শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও এমন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।