প্রতিনিধি, খুলনা: কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৪/১ নম্বর পোল্ডারে বেড়িবাঁধ ভেঙে নদীতীরবর্তী শকিবাড়িয়া ও গাববুনিয়া গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে কমপক্ষে ৫০টি পরিবার ও ছোট-বড় মিলিয়ে ৪০টি চিংড়ি ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সোমবার ভোরে ভাটার সময় বাঁধের ওই অংশের ২০০ মিটার ধসে যায়। দুপুরে সেখান দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে।
দ্রুত বাঁধ নির্মাণ না করা হলে আরো কয়েকটি গ্রাম তলিয়ে যাবে। কারণ দিনে দুবার জোয়ার-ভাটার নিয়মে পানি নতুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়বে। এতে বাঁধের ভাঙা অংশের দৈর্ঘ বেড়ে যাবে। ফলে গোটা উত্তর বেদকাশী ইউনিয়ন পানির নিচে চলে যাওয়ার আশংকা সৃষ্টি হয়েছে।
গ্রামের বাসিন্দারা জানান, গত কয়েক দিনের দুর্যোগপুর্ণ আবহাওয়ার কারণে কপোতাক্ষ নদে জোয়ারের পানির উচ্চতা বেড়ে যায়। এতে বাঁধের দুর্বল অংশ ভেঙে নদের পানি প্রবেশ করে। বাঁধের যে অংশ ভেঙেছে সেখানে একটি চিংড়ি ঘেরের পানি সরবরাহের জন্য পাইপ বসানো ছিল বলে তারা জানান।
শাকবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা ও উত্তর বেদকাশি ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সাধনা খাতুন জানিয়েছেন, বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় তার নিজেরসহ গ্রামের ৫০-৬০টি পরিবারের ঘরবাড়ি লোনা পানিতে তলিয়ে গেছে। তারা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। ওই গ্রামের শান্তিরঞ্জন মৃধা জানান, বাঁধ ভেঙে তার ১৫ বিঘার চিংড়ি ঘেরটি সম্পূর্ণ ভেসে গেছে। এতে তার চার লাখ টাকার মাছ নদীতে চলে গেছে।
উত্তর বেদকাশি ইউপি চেয়ারম্যান সরদার মতিয়ার রহমান অভিযোগ করে বলেন, বাঁধের ওই স্থান সংস্কারের কাজ চলমান ছিল। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া শুরু হলে সেখানে কাজ বন্ধ করে ঠিকাদার চলে যায়। আমরা পাউবোর কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। তিনি জানান, বাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় দুই গ্রামের ৪০টি পরিবারের বাড়ি ঘরসহ প্রায় ২০০ একর জমির চিংড়ি ঘের পানিতে ভেসে গেছে।
পাউবোর উপ-সহকারি প্রকৌশলী আব্দুল মতিন জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। নদীতে পানির স্রোত কমলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ এনামুল কবির বলেন, খবর পেয়ে ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া এবং তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতার জন্য কাজ করা হচ্ছে। তিনি জানান, ঝুঁকিপূর্ণ এ বাঁধটিসহ উপজেলার অন্যন্য স্থানে জরুই পদক্ষেপ নিতে পাউবোকে জানানো সত্বেও তারা এ ব্যাপারে উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছে। স্থানীয়রা এলাকা ছেড়ে পার্শবর্তী এলাকায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।