রতন সিং, দিনাজপুর: মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেছেন, শিশু হত্যার বিচার ত্বরান্বিত করতে প্রয়োজনে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে দোষীদের সাজা দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হবে। সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সকলকে শিশু হত্যা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সরকারের একার পক্ষে এই অপকর্ম রোধ করা সম্ভব নয়। এর জন্য সামাজিক সচেতনতা ও আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় দিনাজপুরে শিশুর প্রতি সহিংসতা নিরসন ও সার্কের সাইভ্যাক বাংলাদেশ কার্যক্রম সংক্রান্ত এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেহের আফরোজ চুমকি এসব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষ কাঞ্চনে জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম,সেলিনা জাহান লিটা এমপি, জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান এ্যাড. মমতাজ বেগম ও অতিরিক্ত সচিব ড. মো. আমিনুল ইসলাম।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে মহিলা ও শিশু সুরক্ষায় ৫০ ধরনের আইন, নীতিমালা ও ধারা রয়েছে। কিন্তু তারপরও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে যা মোকাবেলা করা সম্ভব হচ্ছে না। জনবহুল দেশে সমস্যাগুলো সমাধান করা অনেক কঠিন। নারী ও শিশু নির্যাতন কমাতে ও শতভাগ সমস্যা সমাধানে আইনের সঠিক প্রয়োগ দরকার।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইকবালুর রহিম বলেন, সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বয় করে শিশুদের অধিকার বাস্তবায়ন ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে হবে। দেশে অনেক আগেই শিশু নির্যাতন শুরু হয়েছিল। ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর শিশুপুত্র শেখ রাসেলের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। ছোট শিশু সুকান্ত বাবুসহ বঙ্গবন্ধুর ছোট ভাই প্রতিবন্ধী শেখ নাসেরকেও হত্যা করতে তারা দ্বিধাবোধ করেনি। এই জঘন্যতম হত্যার বিচার যাতে দেশে না হয় সেজন্য একটি কালো অধ্যাদেশ জারি করে বিচার বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু জনগণ ওই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে এদেশের মাটিতে ওই হত্যার বিচার করেছে। সম্প্রতি দেশে কয়টি শিশু হত্যার নির্মম ঘটনা ঘটেছে। ওই হত্যাকারীরাও গ্রেফতার হয়েছে। তাদের বিচারও জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদেশের মাটিতে করবেন। হত্যাকারীরা কোনো অবস্থাতেই ছাড় পাবে না।
কর্মশালায় আরো বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ফরিদুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য সুলতানা বুলবুল, বিরল উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান সোনাভান, বীরগঞ্জের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিনা আখতার, বহুমুখী মহিলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক রাজিয়া বেগমসহ অন্যরা।
মেহের আফরোজ চুমকি বিকেল ৩টায় শিল্পকলা একাডেমিতে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধাভোগী মহিলাদের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। বিকেল ৫টায় মন্ত্রী শহরের মুন্সিপাড়ায় জাতীয় মহিলা সংস্থার নবনির্মিত কমপ্লেক্স ভবনের উদ্বোধন করেন।