হায়দার হোসেন, গোপালগঞ্জ: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪০তম শাহাদাৎবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার সকাল ১০টা ১৩ মিনিটে হেলিকাপ্টারযোগে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকাল ১০টা ১৮ মিনিটে তিনি বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধের বেদীতে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এসময় জাতির পিতার প্রতি প্রদর্শন করা হয় রাষ্ট্রীয় সালাম। সেনা, বিমান ও নৌ বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। এসময় বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর।
পরে ছোট বোন শেখ রেহানাকে সাথে নিয়ে বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টে নিহত পরিবারের সদস্যদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় তারা কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অশ্রুসজল হয়ে পড়েন।
প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর জাতীয় সংসদের স্পীকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ডেপুটি স্পীকার ফজলে রাব্বী মিয়া শ্রদ্ধা জানান।
এরপর দলীয় প্রধান হিসাবে নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ সময় চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, এলজিআরডি মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশারাফ হোসেন, শিল্প মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বানিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষি মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক, এলজিআরডি মন্ত্রী ইঞ্জি. মোশারফ হোসেন, , বন ও পরিবেশ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, পানি সম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, পাট ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী মির্জা আযম, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি, কর্নেল (অবঃ) মুহাম্মদ ফারুক খান, শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি, আবু হাসানাত আব্দুল্লাহ, বাহাউদ্দিন নাসিম এমপি, বিএম মোজাম্মেল হক এমপি, এমপি, এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, ব্যারিষ্টার ফজলে নূর তাপস এমপি, উম্মে রাজিয়া কাজল এমপি, রোকসানা ইয়াছমিন ছুটি এমপি, উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপি, শেখ কবির হোসেন, শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল, কাজী আকরাম উদ্দিন আহম্মদ, আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, মন্ত্রী পরিষদ সচিব মোশারফ হোসেন ভুইয়া, সেনা বাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মো. সফিউল হক, নৌ বাহিনী প্রধান ভাইস এডমিরাল ফরিদ হাবিব, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল আবু এসরার, পুলিশের আইজিপি একেএম শহিদুল হক, র্যাবের ডিজি বেনজির আহমেদ, ঢাকার ডিআইজি এএসএম নুরুজ্জমান, বিএফডিসি ডিজি পিযুষ বন্দোপাধ্যয়সহ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা ও রাজনীতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী পরে রোন রেহানাকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু ভবনে যান এবং সেখানে অবস্থান করেন। বেলা ১১টার দিকে মাজার কমপ্লেক্স মসজিদে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীরা অংশ নেন। দুপুর ১২ টা ৩৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টার যোগে টুঙ্গীপাড়া থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন।
প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর কেন্দ্রীয় কৃষকলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিকলীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন, পেশাজীবী সংগঠন, সামাজিক সংগঠন, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষে বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধের বেদৗতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানানো হয়। প্রধানমন্ত্রী চলে যাওয়ার পর গোপালগঞ্জ ও আশপাশের জেলার আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ও সাধারণ মানুষ জাতির পিতার মাজারে শ্রদ্ধা জানান। ফুলে ফুলে ভরে ওঠে বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধের বেদী।
জেলার বিভিন্ন রাস্তা-ঘাটে ব্যক্তিগত এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে নির্মাণ করা হয় কালো তোরণ। সড়কের পাশে কালো পতাকা দিয়ে শোকের আবহ সৃষ্টি করা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন সুন্দর, নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করতে গোপালগঞ্জ জেলায় বহুস্তুরের বিশেষ নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হয়। এসএসএফ, র্যাব, পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মীরা দায়িত্ব পালন করেছেন।
রাজশাহী থেকে কাজী শাহেদ: রাজশাহীতে শোক ও বিনম্র শ্রদ্ধায় জাতীয় শোক দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শনিবার নগরীর কুমারপাড়ার আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন, জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত করে উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। সকাল ৯টায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পমাল্য অর্পণ করেন নগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।
পরে দলীয় কার্যালয় থেকে শোক পদযাত্রা বের করা হয়। এটি নগরীর প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এর আগে শুক্রবার রাত ১২টা ১ মিনিটে নগরীর লক্ষ্মীপুরে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুক চৌধুরী এমপি, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, সাংসদ আয়েন উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদসহ জেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরো সংবাদ আসছে…